সংবাদদাতা, মালদহ: শুক্রবার চোখের জলে বাবলা সরকারকে শেষ বিদায় জানাল মালদহ। মালদহ মেডিক্যাল থেকে নিজের দলীয় কার্যালয়, পাড়ার ক্লাব, পুরসভা-সর্বত্রই এদিন মরদেহ দেখার জন্য ছিল শোকবিহ্বল জনতার ভিড়। কেউ দিয়েছেন মুঠো ভরা ফুল, কেউ রজনীগন্ধার মালা আবার অনেকে দেহের ওপরে ভেঙে পড়েছেন কান্নায়। এত ফুল জমা হতে থাকে প্রয়াত নেতার শবদেহের উপরে যে আলাদা গাড়িতে সরিয়ে রাখতে হয়। যত এগিয়েছে শবদেহবাহী স্বর্গরথ, প্রবল হয়েছে আমজনতার চিৎকার- বাবলা সরকার অমর রহে! এদিন শোকযাত্রায় মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খায় পুলিস থেকে তৃণমূল নেতানেত্রীরা। প্রত্যেকেই হুড়োহুড়ি করে ছুটে সামনে যেতে চান প্রিয় বাবলা দাকে শেষবারের মতো দেখতে। ইংলিশবাজার পুরসভা ছিল বাবলা সরকারের দীর্ঘ কর্মভূমি। এই পুরসভাতেই তিনি ইনিংস শুরু করেছিলেন কাউন্সিলার হিসাবে। তারপর ভাইস চেয়ারম্যান থেকে এক সময় চেয়ারম্যান। পুরসভার সব আসনেই কোনও না কোনও সময় বসেছেন তিনি। তবে কোনও আসনের গুরুদায়িত্ব বাবলাকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি ইংলিশবাজারের আমজনতা থেকে পুরসভার কর্মীদের থেকে। এদিন পুরসভার এক মহিলা অস্থায়ী কর্মী বললেন, কখনও বুঝতে দেননি তিনি পুরসভার কোনও দায়িত্বে ছিলেন। বরং ভাইস চেয়ারম্যান থাকুন বা চেয়ারম্যান, তাঁর চেম্বারে অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল পুরসভার স্থায়ী বা অস্থায়ী কর্মীদের। পুজোর সময় ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য করতেন আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল প্রতিটি কর্মীকে। এদিন শোক মিছিলে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সাবিনা ইয়াসমিন, সাংসদ মৌসম নুর, তৃণমূলের প্রায় সব বিধায়ক ও কাউন্সিলাররা ছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী নেতানেত্রীরাও। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলম, জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায়, পুরসভার বিরোধী দলনেতা অম্লান ভাদুড়ি, কাউন্সিলর সুতপা মুখোপাধ্যায় সহ অনেকেই এদিন শোকবিহ্বল হয়ে অংশ নেন শেষযাত্রায়। তবে সবাইকে ছাপিয়ে যায় সাধারণ মানুষের স্বতস্ফূর্ত ভিড়।