বিগড়ে গেল পদাতিক এক্সপ্রেস, ৬ ঘণ্টা পর ঢুকল এনজেপি-তে, রাতের অন্ধকারে পাহাড়ে উঠতে বাধ্য হলেন যাত্রীরা
বর্তমান | ০৪ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শীতের ছুটিতে পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে ট্রেনযাত্রার চরম তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন অসংখ্য পর্যটক। বৃহস্পতিবার রাতে শিয়ালদহ থেকে যাত্রা করা পদাতিক এক্সপ্রেসে (১২৩৭৭) ছয় ঘণ্টার বেশি লেট করে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) পৌঁছয়। যাত্রীদের অভিযোগ, পূর্ব রেলের ‘সৌজন্যে’ নতুন বছরের শুরুতেই বেড়াতে যাওয়ার আনন্দ কার্যত মাটি হয়ে গিয়েছে। সকালের দিকে গন্তব্যে পৌঁছে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন পর্যটনস্থলে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে, তা হয়নি। শীতে দিন ছোট তাই দ্রুত সূর্যাস্ত হয়ে যায়। এদিন প্রায় বিকেল নাগাদ পদাতিক এক্সপ্রেস এনজেপি ঢোকে। স্বভাবতই অন্ধকার নামার পর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা গাড়ি নিয়ে পাহাড়ে উঠতে বাধ্য হন। সব মিলিয়ে ২ জানুয়ারির পদাতিক এক্সপ্রেসের (আপ) সফর বহু যাত্রী কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
রেল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহ থেকে যাত্রী বোঝাই পদাতিক এক্সপ্রেস রওনা দেয়। এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই মাঝপথে দাঁড়িয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গগামী এই জনপ্রিয় ট্রেনটি। ইঞ্জিনসহ রেকটিতে একাধিক প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়ে। তার জেরে গতি রুদ্ধ হয়ে যায় ট্রেনটি। এই সময়ে বহু যাত্রী খাওয়া-দাওয়া সেরে বিশ্রামে চলে গিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ট্রেনের ছন্দোময় ঝাঁকুনি বন্ধ থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে বহু পর্যটক। কিন্তু শত চেষ্টার পরেও কী কারণে ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে, তা যাত্রীদের কাছে পরিষ্কার হয়নি। সূত্রের দাবি, দীর্ঘ সময় এই প্রযুক্তিগত বাধার জট কাটানোর চেষ্টা হলেও সমাধান সূত্রে মেলেনি। তা ঠিক করতে করতে ৬ ঘণ্টার বেশি লেগে যায়। ট্রেনের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ এনজেপি ঢোকার কথা ছিল। সেই ট্রেন ওখানে পৌঁছয় বিকেল সাড়ে ৩টের পর। যাত্রীদের একাংশের দাবি, দীর্ঘ সময় মাঝপথে ট্রেন থমকে থাকায় কামরা জঞ্জালে ভরে যায়। একইভাবে কয়েকটি শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে ওঠে। কেননা, পর্যাপ্ত জলের জোগান না-থাকায় বহু যাত্রী শৌচাগার ব্যবহার করতে পারেননি। একইসঙ্গে এই দীর্ঘ সময় ট্রেন লেট থাকায় পর্যটকদের সামগ্রিক পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে যায়। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, যাত্রা শুরুর আগে দূরপাল্লার এই ট্রেনগুলির সঠিক পরীক্ষা হয় না। তা না-হলে মাত্র একঘণ্টার মধ্যে ট্রেন বিগড়ে গেল কেন? প্রশ্ন যাত্রীদের।