আবার বিতর্ক তৈরি করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আগে একবার বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন। সেই রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই এবার নিজের সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে বিতর্কের সঙ্গে প্রবল অস্বস্তি বাড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী। সংখ্যালঘু বিত্তনিগমের অনুষ্ঠানে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আর তার জেরে শাসকদলের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে তুললেন গ্রন্থাগারমন্ত্রী। এবার ঘুরিয়ে সংখ্যালঘু উন্নয়ন নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন সিদ্দিকুল্লা। নতুন বছরের শুরুতে এই বিতর্কিত মন্তব্যের রেশ কেমন করে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ওয়াকফ বিল নিয়েও নানা মন্তব্য আগে করেছিলেন সিদ্দিকুল্লা। এমনকী এই বিলের বিরোধিতা করে মিছিল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তখন সেই মিছিল থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন তিনি। তা নিয়েও বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এই বিষয়ে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, ‘আমি বা আমাদের মতো লোকেরা দলের জন্য যত শ্রম দিয়েছি বা দিচ্ছি, জানি না নবান্ন কতটা তার মূল্য দিয়েছে। এত বড় কথা বলে গেলাম।’ কলকাতা পার্ক সার্কাস ময়দানে প্রত্যেক বছরই মিলন উত্সবের আয়োজন করে রাজ্য সরকারের মাইনরিটি সেল। ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মিলন উত্সব। যা চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই মিলন উৎসবের মঞ্চ থেকে রাজ্যের মন্ত্রীর এমন বেসুরো কথা জোর চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। কেন এমন বললেন তিনি? তাঁর কি আর কোনও প্রত্যাশা রয়েছে? কোনও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে? এই সব প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে। কারণ মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লার বক্তব্য, ‘পশ্চিমবাংলায় তিনটে খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে ১১ কোটি মানুষ। মুসলমান খুটি, মুসলিমের মধ্যে দুটো দলিত আর আদিবাসী। আমাদের ব্যথা বেদনা বোঝবার সময় এসেছে। এখানে জৈন ভাইরা শান্ত হন। পার্সিরা সংখ্যায় কম হন। বৌদ্ধরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে মারামারি করেন না। কিন্তু সেই মূল্যটা কে দেবে? সেটা আমরা দেব একে অপরকে।’
একদিকে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে চাইলেন সিদ্দিকুল্লা। অপরদিকে সেটা যাতে তাঁর দল জমিয়েত উলেমা হিন্দের কাছেই থাকে সেই চেষ্টাও করলেন। সংখ্যালঘুদের নিজেদের দিকে টানতে মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকেও রেয়াত করেননি গ্রন্থাগারমন্ত্রী। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর কথায়, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনে শিখদের অবদান আছে। বৌদ্ধদের অবদান আছে। আমাদের অবদান আছে। একথা পাঠ্য পুস্তকে আসতে হবে। শিক্ষার বইয়ে এই অবদানের কথা নেই। ছাত্ররা জানে না, তারা বোঝে না, স্বাধীনতা আন্দোলনে কার অবদান আছে। প্রত্যেক ধর্ম বর্ণের মানুষের ইতিহাস বইতে থাকতে হবে।’ আগে মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ববি হাকিম রাজনীতিতে আমার চেয়ে অনেক বড়। কিন্তু মুসলমানদের নিয়ে লড়াই আন্দোলনে আমার সংগঠনের ধারে কাছে কেউ নেই।’ আর মিলন উত্সবে যোগ দিয়ে ববি হাকিম বললেন, ‘কোনও রাজনৈতিক নেতা মুসলিমদের হাতে খুন হননি। একটা ধারণা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।’