• শুটআউট অ্যাট মালদা! আতঙ্কে লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র চাইছে বণিকসভা
    এই সময় | ০৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, মালদা: লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র পেতে প্রশাসনের কাছে তদ্বির শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। কী ভাবে পাওয়া যাবে, কতদিনে মিলবে তাই নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাতসকালে দাপুটে তৃণমূল নেতা বাবলা সরকারের শুট আউটের ঘটনায় রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছে মালদার বণিকমহলে।

    শুক্রবার ইংরেজবাজার পুরসভায় নিহত তৃণমূল নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স এবং বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সংগঠনের কর্মকর্তারা। তখনই এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন তাঁরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে পাঁচজন স্বর্ণশিল্পী ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন।

    মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘জেলায় এক লক্ষের বেশি ব্যবসায়ী রয়েছেন। ইংরেজবাজার শহরেই রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার ব্যবসায়ী। এখনও পর্যন্ত কারও সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক নেই। অথচ ছিনতাই, চুরি বেড়ে গিয়েছে। অনেকে আবার দুষ্কৃতীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। পুলিশের অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।’

    তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন ব্যক্তিগত লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র চাই। প্রশাসনকে এটা দিতেই হবে। আমরা এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে মিটিং ডাকব। লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক ছাড়া আত্মরক্ষার কোনও জায়গা নেই। বাবলাদা খুনের পরে এখন ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত।’ এ দিন অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা দোকান খোলার সাহস পাননি। কার্যত একপ্রকার বন্ধের চেহারা নিয়েছে ইংরেজবাজার শহর।

    মালদার ইংরেজবাজার শহরেই একাধিক শপিং মল, অলঙ্কারের শোরুম, বিভিন্ন বাজার রয়েছে। প্রতিদিনই নেতাজী পুর মার্কেট, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মার্কেট, কাজী আজাহারউদ্দিন মার্কেট, মকদমপুর মার্কেট, কলকাতা বাজার থেকে শুরু করে নানা শপিং মল রাত এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত খোলা থাকে।

    এ ছাড়াও ইংরেজবাজার শহরের বিনয় সরকার রোডের শতাধিক স্বর্ণকারের দোকানও সাড়ে দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত খোলা থাকে। রাতে হিসাবপত্র করে অনেক ব্যবসায়ীর বাড়ি ফিরতে দেরি হয়। তাই নিজেদের কাছে ব্যক্তিগত লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র রাখার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির মালদা জেলা সম্পাদক উজ্জল সরকার। তিনি বলেন, ‘লুট–হামলার ঘটনায় এমনিতেই আতঙ্কিত ছিলেন ব্যবসায়ীরা। বাবলা খুনের ঘটনার পরে আর কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। ধার দেনা করে হলেও লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র রাখার পক্ষে সকলে।’

    মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উত্তম বসাক বলেন, ‘এতদিন দোকানে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের ভয় ছিলই। এখন বাবলার মৃত্যু নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে। রাতে টাকাপয়সা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। নিরাপত্তা কে দিবে? সাত সকালে দুষ্কৃতীরা অত বড় তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন করল, আমরা তো সাধারণ ব্যবসায়ী। মালদার ৫০ জন ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নেওয়ার জন্য ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন। পাঁচ জন আবেদনপত্র জমাও দিয়েছেন। আমিও জমা দিয়েছি।’

  • Link to this news (এই সময়)