শীত এলেই জমে যায় ভিড়, পিঠে পুলির চালের জন্য আজও ভরসা বিশ্বাস বাড়ির ঢেঁকি ...
আজকাল | ০৪ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহর তো বটেই, হালফিলে গ্রামের ছেলেদের কাছেও ঢেঁকি ঠিক কী সেটা পরিষ্কার নয়। আগে অঘ্রাণ মাসে নতুন ফসল ঘরে তোলার পর ঢেঁকির আওয়াজে মুখরিত হত গ্রামের বাড়িগুলি। থাকত ঢেঁকির জন্য আলাদা ঘর। চাল তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন মহিলারা। ঢেঁকির পার দেওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হয়েছে নানা গান। বর্তমানে তার জায়গায় এসেছে বিদ্যুৎ চালিত মেসিন। হারিয়ে গিয়েছে সেইসব গান। এখন শীতকাল। আর শীত মানেই পিঠে-পুলি। ভালো পিঠে-পুলির জন্য ঢেঁকি ছাটা চালের গুঁড়ো আজও বাঙালির প্রথম পছন্দের।
এই চাল তৈরিতে প্রথমে চাল ভিজিয়ে তারপর একটি গর্তের ভিতর ফেলে ঢেঁকিতে পার দেওয়ার পর চালুনি দিয়ে চেলে যে গুঁড়ো হয় তার স্বাদ একেবারেই অন্যরকম। আর এই অন্যরকম স্বাদের জন্য নদীয়ায় বাদকুল্লায় সুশান্ত বিশ্বাসের আশ্রম পাড়ার বাড়িতে আসেন অনেক মহিলা। ঢেঁকির পার দিয়ে চাল গুঁড়ো করে নিয়ে যান তাঁরা। ফলে শীত এলেই বিশ্বাস বাড়ির উঠান গমগম করে। গানের সঙ্গে গল্প করে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করে বেলাশেষে ফিরে যান মহিলারা। না, কোনও পারিশ্রমিক নেন না সুশান্ত। তিনি বলেন, 'এই ঢেঁকির বয়স ১০০ বছর। বাবলা কাঠের তৈরি।
শীতকাল তো বটেই বছরের অন্য সময়েও লোকে প্রয়োজনমতো চাল গুঁড়ো করে নিয়ে যান।' শুধুমাত্র গ্রামীণ ঐতিহ্য বজায় রাখতেই তিনি এই ঢেঁকি রেখে দিয়েছেন। অনিমা মিত্র নামে স্থানীয় এক মহিলা জানান, বাংলাদেশে একসময় তিনি চালের গুঁড়োর পাশাপাশি চিড়েও ঢেঁকিতে কুটে নিয়ে যেতেন। ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুঁড়োর তৈরি পিঠা খুব সুস্বাদু। সুশান্তর স্ত্রী নীলিমা বিশ্বাসও ঢেঁকিতে পার দেন। তাঁর কথায়, পরিশ্রম হলেও খাওয়ার সময় মনে হয় সার্থক। যারা জানেন তাঁরাই এর কদর বুঝবেন।