আজকাল ওয়েবডেস্ক: বক্সা-জয়ন্তীতে পর্যটন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না। পর্যটনের ভরা মরশুমে বক্সার জঙ্গলে ঘুরতে না পেরে পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছেন চিলাপাতায়। চিলাপাতাতে এখন তিল ধারণের স্থান নেই। চিলাপাতার ঘনজঙ্গলে বন্যপ্রানী দেখতে আসেন অনেকেই। চিলাপাতার পাশাপাশি মেন্দাবাড়ি জঙ্গলের বিট অফিস চত্বরে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য রাভা নৃত্যের আয়োজন করা হয়। সেখানেও পর্যটকদের উপচে পড়ছে ভিড়।
কোদালবস্তি রেঞ্জ থেকে পর্যটকদের জন্য রয়েছে হাতি সাফারি ও জিপ সাফারির ব্যবস্থা। এই জঙ্গলে প্রবেশ করার মুখেই দেখা মিলছে হাতি,গণ্ডার,বাইসন,সম্বর হরিণ,ময়ূরের। যা দেখে উচ্ছসিত পর্যটকরা আলিপুরদুয়ার জেলা সদর থেকে ২০ কিমি দূরে ডুয়ার্সের একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র চিলাপাতা। হাসিমারা থেকে বাসে চেপে ১০০ টাকার মধ্যে ঘুরে আসা যাবে কোদালবস্তির রেঞ্জের জঙ্গল আর চিলাপাতায়। ডুয়ার্সের অন্যতম বড় বনাঞ্চল হল এই চিলাপাতা। দীর্ঘ তার পরিসর। তোর্সা নদী ছাড়াও এই জঙ্গলের ভেতর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ছোট বড় অনেকগুলি নদী। চিলাপাতার গহীন জঙ্গলের সবটা একদিনে দেখে শেষ করা যায় না। চিলাপাতার জঙ্গলের একটা বড় ইতিহাস রয়েছে। এই জঙ্গলকে বলা হয়ে থাকে কোচ রাজাদের মৃগয়াক্ষেত্র। এখানে তাঁরা শিকার করতে আসতেন।
কোচ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্ব সিংহের পুত্রদের মধ্যে অন্যতম হলেন শুক্লধ্বজ। পিতার রাজ্য রক্ষা ও বিস্তারের জন্য শুক্লধ্বজ'কে সেনাপতি বানানো হয়। চিল পাখির মতোও ছোঁ মেরে অতর্কিতে শত্রুদের উপর আক্রমণ করার পারদর্শীতার জন্য তাকে চিলা রায় বলা হত। গেরিলা যুদ্ধে পারদর্শী চিলারায়কে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা বলা হয়ে থাকে। মনে করা হয় তার নাম অনুসারেই এই অরণ্যের নাম চিলাপাতা। এই জঙ্গলের ভেতর কোচ সাম্রাজের পুরানো কিছু ধ্বংসাবশেষও পাওয়া যায়। যেটি স্থানীয় ভাবে নল রাজার গড় নামে পরিচিত। চিলাপাতা জঙ্গলে প্রবেশের জন্য স্থানীয় রেঞ্জ অফিস থেকে পারমিট করানো প্রয়োজন।
চিলাপাতা জঙ্গল সাফারি গাইড টিঙ্কু কাজির কথায়, 'এই জঙ্গলে গন্ডার, হাতি, হরিণ, বাইসন সবসময়ই দেখা যায়। বন্যপ্রানী দেখে পর্যটকরা খুশি হচ্ছেন।বেশিরভাগ পর্যটকই আসছেন কলকাতা থেকে। অফলাইনেই হাতি সাফারি বুক করতে পারছেন পর্যটকরা। তাই এখানে ক্রমশ পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে।' পর্যটন ব্যাবসায়ী গণেশ শা জানান, 'শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকরা আসছেন। পছন্দমতো জায়গায় তাঁরা থাকছেন। তবে চিলাপাতায় সাফারিতে খুব ভালো বুকিং হচ্ছে, বন্য জন্তু সাইটিং ও ভালো হচ্ছে।' জয়িতা সরকার নামে এক পর্যটক জানান, 'এই প্রথম হাতি, হরিণ, ময়ূর একদম সামনে থেকে দেখলাম। আমার বন্ধুদের কাছে গিয়ে গল্প বলব। ছবি তুলেছি অনেক।'