এক না একাধিক, এ নিয়ে সাম্প্রতিকতম রিপোর্টটি দিল্লির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের। বিশেষ ভাবে গঠিত এই দলটি সিবিআইয়ের কাছে যে মতামত পাঠিয়েছে তাতে বলা হয়েছে— এক জনের পক্ষেও ঘটানো সম্ভব আরজি কর-কাণ্ড। নির্যাতিতার শরীরে যে ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, আরজি করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা এক জনও ঘটিয়ে থাকতে পারেন। সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনের সঙ্গে ঘটনার তথ্যপ্রমাণ মিলিয়ে দেখে তবেই এ সম্পর্কে আরও ‘নিশ্চিত’ হওয়া যাবে বলে অভিমত প্রকাশ করে দিল্লির ওই চিকিৎসক দল।
নির্যাতিতার বাবা-মায়ের তরফে শনিবার শিয়ালদহ আদালতে ৫৭ পাতার লিখিত বক্তব্য জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে তাঁরা এই ঘটনায় আরও তদন্ত করা হোক বলে আর্জি জানিয়েছেন। তাঁরা এখনও মনে করছেন, এমন ঘটনা একা ঘটানো সম্ভব নয়। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার একা এই ঘটনায় যুক্ত নন বলে তাঁরা মনে করছেন। মনে করছেন, এর নেপথ্যে আরও কেউ রয়েছেন। তাঁরা চান, আরও তদন্ত করা হোক এবং আরও কারা জড়িত, তা খুঁজে বার করে নতুন করে চার্জশিট জমা দেওয়া হোক। নির্যাতিতার আইনজীবী অমর্ত্য দে বলেন, ‘‘এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত রয়েছেন, তা প্রকাশ্যে আসুক। আর কেউ জড়িত কি না, তা-ও উঠে আসুক তদন্তে।’’ এই তদন্তের পাশাপাশি, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের সর্বোচ্চ সাজারও আবেদন জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা।
শনিবার শিয়ালদহ আদালতে শুনানিতে ধৃতের আইনজীবী তাঁর সওয়ালে বলেন, ‘‘পারিপার্শ্বিক যে সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে, তাতে সিসিটিভি ফুটেজের যে অংশ দেখা যাচ্ছে, তাতে এক জনের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব না। এর নেপথ্যে অন্য কেউ থাকতে পারেন। ধৃত এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন।’’
মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ জানুয়ারি (আগামী বুধবার)। ওই দিন ধৃতের আইনজীবীর আবারও বলার কথা রয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে নেমে ঘটনার পরদিনই কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল সিভিক ভলান্টিয়ারকে। সেই সিভিক ভলান্টিয়ারেরই বিচার চলছে নিম্ন আদালতে। পরে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। দু’জনেই ওই মামলায় জামিন পেয়েছেন। তবে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক তছরুপের ঘটনায় এখনও জামিন পাননি সন্দীপ।