• পাসপোর্টের জন্য আবেদন তরুণীর, জন্মের শংসাপত্র যাচাই করতে গিয়েই পর্দা ফাঁস
    এই সময় | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডের তদন্তে এ বার নতুন তথ্য। পাসপোর্টের জন্য জন্মের শংসাপত্র দাখিল বর্ধমানের তরুণীর। আর সেই শংসাপত্র পরীক্ষা করে দেখা গেল, তা ভুয়ো। এখনও অবধি এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা দপ্তর বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এর পরই ১৯ ডিসেম্বর রিঙ্কা দাস নামে ওই তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরই আসতে আসতে এই ঘটনার পর্দা ফাঁস হয়।

    বর্ধমান শহরের বড়নীলপুর থেকে স্বরূপ রায় ওরফে রামু নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাসপোর্টের জন্য জাল শংসাপত্র তৈরির অভিযোগে হুগলির সিঙ্গুর থেকে গণেশ চক্রবর্তী ও অনির্বাণ সামন্ত নামে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। শনিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।

    পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ধমান থানা এলাকার বাসিন্দা রিঙ্কা দাস সম্প্রতি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের সঙ্গে জন্মের শংসাপত্রের কপি জমা দেন তিনি। যেহেতু সেই শংসাপত্র বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়, তা যাচাইয়ের জন্য বর্ধমান জেলা গোয়েন্দা দপ্তরে পাঠানো হয়।

    এর পরই গোয়েন্দা দপ্তর রিঙ্কাকে অফিসে ডেকে পাঠায়। শংসাপত্রের আসল কপি নিয়ে হাজির হন রিঙ্কা। সেখানেই জন্মের শংসাপত্র নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সংশয় নিরসনে গোয়েন্দা দপ্তরই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে খবর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জানিয়ে দেয়, এটি জাল। তাতেই আইনি পথে হাঁটে জেলা গোয়েন্দা শাখা।

    প্রথমে গ্রেপ্তার হন রিঙ্কা নামে ওই তরুণী। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, জাল শংসাপত্রটি তাঁকে স্বরূপ রায় নামে এক ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পরই জেরায় উঠে আসে গণেশ ও অনির্বাণের নাম। তাঁরাও গ্রেপ্তার হন।

    সম্প্রতি বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। কলকাতার পাশাপাশি একাধিক মেট্রো শহরে এই পাসপোর্ট চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে তদন্তকারীদের হাতে তথ্য উঠে আসে। শিকড় বহু দূর ছড়িয়েছে, এমনও তথ্য আসতে থাকে। নড়েচড়ে বসে প্রশাসনও।

    পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন নিয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। যিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন, তাঁর নথি খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট করে দেওয়া হয় বলে খবর। তদন্তে নেমে কলকাতার লালবাজার ও উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানার পুলিশ কলকাতা পুলিশের এক প্রাক্তন সাব ইন্সপেক্টরকে গ্রেপ্তারও করে। এ বার বর্ধমানে চার জনের গ্রেপ্তারির খবর সামনে এল।

  • Link to this news (এই সময়)