আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের নওদা থানা এলাকা থেকে জঙ্গি গ্রেপ্তারের পর এবার সেখানে প্রকাশ্যে শুটআউটের ঘটনা ঘটল। শনিবার বিকালে সর্বাঙ্গপুর-পূর্বপাড়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন রিন্টু বিশ্বাস নামে বছর সাতাশের এক যুবক। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অন্যদিকে গুলি চালানোর ঘটনার পর গ্রামবাসীরা সর্বাঙ্গপুর-শ্যামনগর হয়ে রেজিনগর যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন। নওদা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টা পর্যন্ত পথ অবরোধ ওঠেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের একটি পুজো শেষে ঠাকুরের মূর্তি নিয়ে আজ পূর্বপাড়ার বাসিন্দারা গ্রাম প্রদক্ষিণ করছিলেন। সেই সময় একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য কিছু লোক গ্রামের পথ ধরে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠাকুর নিয়ে পথ জুড়ে শোভাযাত্রা চলতে থাকায় কিছু লোক ওই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গাড়ি নিয়ে যেতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ।
সেই সময় কয়েকজন ব্যক্তি একটি গাড়ি থেকে নেমে প্রথমে শূন্যে ৭-৮ রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে ওই ব্যক্তিরা আরও কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। সেই সময়ে রিন্টু বিশ্বাস নামে একজন যুবকের বুকে গুলি লাগে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে গাড়ির 'কনভয়' থেকে গুলি চালানো হয়েছিল তার মধ্যে একটি গাড়িতে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শফিউজ্জামান শেখ উপস্থিত ছিলেন।
গুলি চালানোর ঘটনার পর স্থানীয় লোকেরা ওই রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যাওয়া একটি বাস রাস্তাতেই আটকে দেন। সন্ধে পর্যন্ত বাসটি এলাকাতেই আটকে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যদিও গুলি চালানোর ঘটনার সময় এলাকায় উপস্থিতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শফিউজ্জামান বলেন, 'আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দ্রুত ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে আমার সর্বাঙ্গপুরে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। সেখান থেকে ফেরার সময় আমি জানতে পারি একটি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। সর্বাঙ্গপুর এলাকায় বিজেপির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। আজ কিছু ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় আমাদের দলের লোকেদেরকে গাড়ি নিয়ে সর্বাঙ্গপুরে আসতে বাধা দেয়। সেই সময় একটি গন্ডগোল হয়েছে। আমাদের দলীয় কর্মীদের একটি বাসও আটকে রাখা হয়েছে। বিস্তারিত আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।' অন্যদিকে বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাঁখারভ সরকার বলেন, 'বাজনা বাজিয়ে গ্রামের লোকেরা ঠাকুর বিসর্জন দিতে যাওয়ার কারণে একটি গাড়ি হর্ন দিলেও কয়েকজন তা শুনতে পাননি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তৃণমূল কর্মীরা গুলি চালিয়েছে। এই ঘটনায় রিন্টু বিশ্বাস নামে এক নিরীহ গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।'