• কৃষ্ণনগরের ভাণ্ডারখোলায় তৃণমূল নেতা ও তাঁর স্ত্রীর নামে খাসজমির পাট্টা, বিতর্ক
    বর্তমান | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর (ভাণ্ডারখোলা): ভূমিহীন নন। আর্থিক অবস্থাও যথেষ্ট ভালো। তবু সরকারি খাসজমির পাট্টা আছে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির নামে। তাঁর স্ত্রীর নামেও পাট্টা আছে। তিনি আবার পঞ্চায়েত সদস্য। কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের ভাণ্ডারখোলা পঞ্চায়েতে এঘটনায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই কী ওই তৃণমূল নেতা সরকারি খাসজমি নিজের নামে করেছেন? অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার দাবি, বাম আমলেই তিনি পাট্টা পেয়েছেন। শাসকদলের তরফে অবশ্য তাঁকে এই অভিযোগ নিয়ে আগেই সতর্ক করা হয়েছে।

    খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি জমি দখল নিয়ে সরব হয়েছেন। সেই জায়গায় তৃণমূল নেতার জমি ‘দখল’ নিয়ে বিরোধী শিবিরও কটাক্ষ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, ভূমিহীনরাই চাষাবাদ ও বসবাসের জন্য পাট্টা পেতে পারেন। এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি ও ভূমিসংস্কার) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, কারও কাছে একরের কম জমি থাকলে তিনি পাট্টার জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে ভাণ্ডারখোলার বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা পড়েনি।‌ আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

    তৃণমূলের ভাণ্ডারখোলার অঞ্চল সভাপতির নাম নবকুমার ঘোষ। তাঁর স্ত্রী সুলেখা ঘোষ ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য এবং আইসিডিএস কর্মী। গত লোকসভা নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছিল। ভাণ্ডারখোলা পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান পুতুল বিশ্বাস বলেন, ওঁর পক্ষে খাসজমি নিজের নামে পাট্টা করিয়ে নেওয়া কোনও ব্যাপার না। উনি এই লাইনের সঙ্গেই যুক্ত। জমির রেকর্ড বদল করে দেন। বিভিন্ন কাজে বাধা দেন। আমাদের কাছে মাঝেমধ্যেই ওঁর নামে অভিযোগ আসে।

    নবকুমারবাবুর আর্থিক অবস্থা মন্দ নয়। ভাণ্ডারখোলা পঞ্চায়েত অফিস লাগোয়া গলির ভিতরে বড় জমিতে তাঁর একতলা পাকা বাড়ি। সামনে বড় উঠোন। তবু বাড়ির উল্টোদিকে একটা ফাঁকা জায়গার ভিতরের দিকে দু’টি সরকারি জমির পাট্টা পেয়েছেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী।

    নবকুমারবাবু বলেন, ২০০৬ সালে আমি বামফ্রন্ট সরকারের কাছে আবেদন করে এই পাট্টা পাই। অঞ্চল সভাপতি অনেক পরে হয়েছি। তাই রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর প্রশ্নই ওঠে না। আমার বাড়ি পাট্টার জমিতে নয়। মাঠের ভিতরে পাট্টার জমি রয়েছে।

    তৃণমূলের কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের উত্তর বিধানসভার সভাপতি দেবব্রত ঘোষ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এলাকা থেকেও এনিয়ে অভিযোগ আসছিল। দলের তরফে সতর্ক করা হলেও উনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। সরকারি জমির পাট্টা মূলত ভূমিহীনরাই পায়। কিন্তু ওঁর আর্থিক অবস্থা ভালো। কী করে ওই দম্পতির নামে পাট্টা রয়েছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে দলের তরফে শোকজ করা হবে। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)