• বাংলাদেশি নাবালিকাকে পাচারের দায়ে ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
    বর্তমান | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: নারী পাচারে অভিযুক্ত তিন বিচারাধীন বন্দিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রানাঘাট মহাকুমা আদালত। শুক্রবার লতা সরকার ওরফে পূজা, বকুল মণ্ডল এবং জসীম মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্ত। শনিবার তাদের তিনজনকেই যাবজ্জীবন(আমৃত্যু) কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। এছাড়াও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন বছরের মাথায় রায়দান করল আদালত। 

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল ঘটনাটি ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট ঘটেছিল। ধানতলা থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ঝোড়পাড়া আউটপোস্ট সংলগ্ন এলাকায় পোস্টিং ছিল বিএসএফের অবিনাশ কুমার এবং পঙ্কজ মিনা নামে দুই জওয়ানের। তাঁরা দেখতে পান, বেশ কয়েকজন নাবালিকাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে এই দেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। ভয় দেখাতে তাঁদের মধ্যে এক জওয়ান শূন্যে গুলি ছোড়েন। প্রত্যেকেই পালিয়ে গেলেও ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে বিএসএফ। পরে বিএসএফের অষ্টম ব্যাটালিয়নের সাব-ইন্সপেক্টর সন্দীপ কুমার ধানতলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে জানা যায়, কাজ দেওয়ার নাম করে বাংলাদেশের ওই নাবালিকাকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাকে নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রির ছক কষা হয়েছিল। ওই নাবালিকা বিষয়টি বুঝতে পারলেও পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ধানতলা থানার পুলিস তদন্তে নেমে গ্রেপ্তার করে বকুল এবং জসীমকে। পরবর্তীতে অবশ্য এই মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। তাদের অনুসন্ধানে তৃতীয় নাম হিসেবে উঠে আসে লতা সরকার ওরফে পূজা ওরফে পায়েলের নাম। মূলত এই লতাই বাংলাদেশ থেকে কাজের লোভ দেখিয়ে মেয়েদের আনার ব্যবস্থা করত। তারপর বিক্রির জন্য তুলে দিত বকুল এবং জসীমের হাতে। তাকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচার প্রক্রিয়ায় মোট ১৯জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ গৃহীত হয়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিএসএফ কর্মীও ছিলেন। শুক্রবার এই মামলায় তিনজনকেই দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। মামলার সরকারি আইনজীবী অপূর্বকুমার ভদ্র বলেন, বিচারক সকলের সাক্ষ্য শুনেছেন। অত্যন্ত খারাপ উদ্দেশ্যে ওই নাবালিকাকে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাই প্রত্যেকেরই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আমরা এই রায়ে অত্যন্ত খুশি।
  • Link to this news (বর্তমান)