• ‘নিজের লোক’কে সভাপতি নয়, স্পষ্ট বার্তা বনসলের
    এই সময় | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: ‘নিজের লোক’দের বুথ অথবা মণ্ডল সভাপতি করা যাবে না— শনিবার রাজ্যের সব জেলা সভাপতির উদ্দেশে এমনই নির্দেশ দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। এর আগে জেলায় জেলায় সার্কুলার পাঠিয়ে এই মর্মে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি বিজেপির জেলা সভাপতিদের অনেকের।

    সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতে না হতেই নিজেদের ঘনিষ্ঠদের জন্য জেলা সভাপতিরা তদ্বির করতে শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। শুধু সার্কুলারে কাজ হবে না বুঝে শনিবার সব জেলা সভাপতিকে সল্টলেকের একটি বিলাসবহুল হোটেলে ডেকে পাঠিয়ে সতর্ক করলেন বনসল।

    এ দিন সঙ্গে ছি‍লেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে বিজেপিতে বুথ সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। চলবে আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। তারপরই শুরু হবে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া। দলীয় সংগঠনে নিজের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে জেলা সভাপতিরা নিজেদের ঘনিষ্ঠদেরই সাধারণত বুথ এবং মণ্ডল সভাপতির চেয়ারে বসাতে চান। একই ভাবে স্থানীয় সাংসদ–বিধায়করাও নিজেদের লোকদের বসাতে চান পার্টির সাংগঠনিক পদগুলিতে। জনপ্রতিনিধি আর সাংগঠনিক নেতৃত্বের এই দ্বন্দ্বই এই মুহূর্তে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মাথাব্যথার কারণ।

    আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির কথা মাথায় রেখে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন, যেনতেন প্রকারে বঙ্গ–বিজেপিকে এক সূত্রে বাঁধতে। কিন্তু জেলা সভাপতিরা এখন থেকেই যে ভাবে বুথ এবং মণ্ডল সভাপতিদের চেয়ারগুলিতে নিজেদের লোক বসাতে চাইছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বনসলরা। সূত্রের খবর, এ রাজ্যের বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদ সম্প্রতি জেলা সভাপতিদের ভূমিকা সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়েছেন বনসলের কাছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে জে‍লা সভাপতিদের উদ্দেশে বনসল বলেন, ‘আপনারা নিজেদের লোকদের বুথ অথবা মণ্ডল সভাপতি করার চেষ্টা করবেন। যোগ্যতাই একমাত্র মাপকাঠি হবে।’

    তাঁর সংযোজন, ‘পুরোনো নেতা–কর্মীদের বুথ সভাপতি করুন। মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের সময়েও যেন নতুন–পুরোনো ভারসাম্য বজায় থাকে।’ তিনি জানান, নিছক সতর্কবার্তাই নয়, সাংগঠনিক নির্বাচনের সময়ে তাঁর নির্দেশ মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার উপর নজর রাখা হবে। নির্দেশ না–মানা হলে জেলা সভাপতিদের শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে। তবে বনসলের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিজেপির এক প্রবীণ নেতার প্রশ্ন, ‘নিছক জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে কেউ যদি মণ্ডল সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে বাদ পড়েন, তা হলে সংগঠন চলবে কী ভাবে? জেলা সভাপতিকেই তো তখন দলের নিচুতলার নেতারা এড়িয়ে চলবেন!’

  • Link to this news (এই সময়)