• জীবন বাজি রেখে ফের ময়দানে ওসি মেঘনাদ মণ্ডল
    এই সময় | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • সঞ্জয় দে, দুর্গাপুর

    রানিগঞ্জে সোনার দোকান থেকে ডাকাতি করে বেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলেছিল পুলিশের সাব–ইনস্পেক্টর মেঘনাদ মণ্ডলের। একটা বিদ্যুতের খুঁটির আড়ালে নিজেকে রেখে সার্ভিস রিভলভার থেকে ছোড়া মেঘনাদের গুলিতে জখম হয়েছিল এক দুষ্কৃতী। কয়েক মাস আগের সেই গুলির লড়াইয়ের স্মৃতি এখনও ফিকে হয়নি। আর জীবন বাজি রেখে লড়াইয়ের ময়দানও ছাড়েননি ওসি মেঘনাদ। শুক্রবার রাতে তার প্রমাণ ফের একবার পাওয়া গেল। এ বার অন্ডালের উখড়ায়।

    সম্প্রতি অন্ডাল থানায় ওসি হিসেবে যোগ দিয়েছেন মেঘনাদ। শুক্রবার রাতে উখড়ায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে চিকিৎসা করাতে এসে মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের একটি শিশুর। এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মারমুখী হয়ে ওঠে মৃত শিশুর পরিবারের লোকেরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কিছু প্রতিবেশী। মুহূর্তে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে। খবর পেয়ে অন্ডাল থানা থেকে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেঘনাদ। চিকিৎসককে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা।

    পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়া হয়। হঠাৎ একটা ইট এসে লাগে মেঘনাদের মাথায়। তাঁর মাথায় আঘাতের জায়গা থেকে ঝরতে থাকে রক্ত। তড়িঘড়ি আশপাশ থেকে ব্যান্ডেজ জোগাড় করে তাঁর মাথায় বেঁধে দেওয়া হয়। ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে চিকিৎসককে থানায় নিয়ে আসেন তিনি।

    এর পর কেন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে নিজের চিকিৎসা করান মেঘনাদ। মাথায় গুরুতর আঘাত পেলেও তিনি এলাকা ছাড়েননি। শনিবার সকালে নির্দিষ্ট সময়ে থানায় এসে কাজে যোগও দেন। মেঘনাদ বলেন, ‘মাথার পিছন দিকে আঘাত লেগেছে। পাঁচটা স্টিচ পড়েছে। সেই সময়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে গেলে বড় সড় গন্ডগোল হতে পারত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর কেন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার সকালে তাদের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে।’

    ওই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমেও। মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা অবস্থায় উত্তেজিত জনতাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার ভিডিয়োয় চোখ রাখেন বহু মানুষ। অন্ডাল থানা এলাকার বাসিন্দা তথা জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থ দেওয়াসি বলেন, ‘রানিগঞ্জে গুলির লড়াইয়ের পর থেকে আমরা মেঘনাদ মণ্ডলের ফ্যান। শুক্রবার রাতে উখড়ার ঘটনায় মাথা ফেটে যাওয়ার পরেও ঘটনাস্থল থেকে যে ভাবে তিনি পরিস্থিতি সামলেছেন তা সত্যি প্রশংসনীয়।’

  • Link to this news (এই সময়)