• গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পিকনিক বদলে গেল রণক্ষেত্রে, গ্রেপ্তার ৪
    এই সময় | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, বর্ধমান: পিকনিকের আসর পরিণত হলো রণক্ষেত্রে। শুক্রবার রাতে খণ্ডঘোষের কেশবপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে চলল বোমাবাজি। ভাঙচুর চা‍লানো হলো একাধিক মোটর বাইকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম ওরফে ফাগুন ও খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীন বাগের গোষ্ঠী। গন্ডগোলের খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় ৪ জনকে।

    বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘পিকনিক করার সময়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি ও অশান্তির জেরে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করেছে। তবে ধৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনও জানা যায়নি।’

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক সভাপতি ফাগুন অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূলকর্মী শেখ শামিমের গ্যারাজে পিকনিক চলছিল। অন্য দিকে, কেশবপুরেরই আর একটি জায়গায় বিধায়ক অনুগামী মির গিয়াসুদ্দিন তাঁর লোকজনকে নিয়ে পিকনিক করছিলেন। অভিযোগ, রাত পৌনে দশটা নাগাদ গিয়াসউদ্দিন, মির এরফান আলি, মির রফিক–সহ কয়েকজন শামিমের গ্যারাজের সামনে এসে সেখানে রাখা কতগুলি মোটর বাইকে ভাঙচুর চালাতে থাকেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্তত ১০টি বাইক। এমন ঘটনায় পিকনিক ফেলে দলবল নিয়ে গ্যারাজ থেকে বেরিয়ে আসেন শামিম। তখনই শুরু হয় বোমাবাজি।

    এলাকার বাসিন্দা শেখ কাশেম বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকেই দু’জায়গায় বক্স বাজিয়ে পিকনিক হচ্ছিল। আচমকা ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত লোকজন শামিমের গ্যারাজে এসে হামলা চালায়। পুলিশ সময়ে না এলে বড় ঘটনা ঘটে যেত।’ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত শামিমের লোকজনকে শান্ত করে। এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় গিয়াসুদ্দিনরা। এর পর রাতভর তল্লাশি চালিয়ে কেশবপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গিয়াসউদ্দিন, মির আবু তালেব, শেখ আমির আলি ও শেখ পিয়ার আলিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

    শনিবার সকালে এলাকার তৃণমূলকর্মী নাসিরুদ্দিন মল্লিক বলেন, ‘আমরা গ্যারাজে পিকনিক করছিলাম। হঠাৎ বিজেপিকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গিয়াসউদ্দিন এসে হামলা চালাল। আমাদের বাইক ভাঙচুর করল।’ আর এক তৃণমূলকর্মী শেখ মনিরুল বলেন, ‘২০২১ সালে সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল মির একরাম আলি ও মির রফিক। এরাই এখন বিধায়কের সম্পদ। এদের ছাড়া এলাকায় ঘুরতে পারেন না বিধায়ক। এদের নিয়েই কাল তাণ্ডব চালিয়েছে গিয়াসউদ্দিনরা।’

    গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীন বাগ। তিনি বলেন, ‘এ সব একেবারে মিথ্যা রটনা। এখানে সবাই তৃণমূল। পিকনিক করার সময়ে মদ খেয়ে মারামারি হয়েছে, বোমাবাজি হয়েছে। পুলিশ দেখছে বিষয়টি। গোষ্ঠীকোন্দল কিছু নেই।’ অন্য দিকে, ব্লক সভাপতি অপার্থিবের বক্তব্য, ‘যা জানানোর দলের জেলা সভাপতির কাছে জানাব। কী ভাবে আমাদের কর্মীদের হুমকি, গালিগালাজ করা হচ্ছে, কে করছে সব তথ্যপ্রমাণ আমি তাঁর কাছেই দেবো। যত বড় নেতাই হোন খণ্ডঘোষে আমি অশান্তি করতে দেবো না।’

  • Link to this news (এই সময়)