ছ’জন অতিরিক্ত এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করছে কলকাতা পুরসভা, কিন্তু কেন?
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
দু’দিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট শহরের ৮টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। সে কাজ এখন চলছে। কিন্তু বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ কি কমেছে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ টক টু মেয়র অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত স্তরে এই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ শুনতে হয় মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। এই বিস্তর অভিযোগের জেরে জেরবার কলকাতা পুরসভা। বিষয়টি নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ সাফল্য আসেনি। বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়াতে নতুন ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার।
এই ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগে কি সমস্যার সমাধান হবে? এই প্রশ্ন এখন অনেকের। নবান্ন সূত্রে খবর, কলকাতায় বিল্ডিং প্ল্যান মেনে বাড়ি তৈরি হচ্ছে কিনা এবং জলাজমি বুজিয়ে বা পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণ হচ্ছে কিনা সেটার উপরে নজরদারি বাড়াতে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে আরও অতিরিক্ত ছ’জন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে বাড়তি নজরদারি করে বেআইনি নির্মাণ ঠেকানো যাবে বলে মনে করছেন কলকাতা পুরসভার কর্তারা। এখন কলকাতা পুরসভায় ১০ জন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আছেন। সেই সংখ্যা এবার বেড়ে হবে ১৬।
এই ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা বাড়লে বরো ভিত্তিতে ইঞ্জিনিয়ার থাকবে। সেক্ষেত্রে কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে। এখন কলকাতা শহরে আবাসন নির্মাণের সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট হচ্ছে। আর তখনই সেই সুযোগে হয়ে যাচ্ছে বেআইনি নির্মাণ। আবার কলকাতা শহরের নানা জায়গায় পড়ে থাকা জলাজমিতে রাতের অন্ধকারে রাবিশ ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তারপর সেখানে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে বহুতল। তাই এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। ৪ ও ৫ নম্বর বরোর দায়িত্বে আছেন একজন। আর বেহালার ১৩ ও ১৪ নম্বর বরোর দায়িত্ব সামলান একজন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। সেখানে প্রতিটি বরো অনুযায়ী ইঞ্জিনিয়ার থাকলে নজরদারি বাড়ানো যাবে।
এভাবেই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। একটি বরো এলাকাতে গড়ে ১২ থেকে ১৩টি ওয়ার্ড। সেখানে একাধিক বরোর দায়িত্ব একজন ইঞ্জিনিয়ারের পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। প্রত্যেক বরোতে একজন করে ইঞ্জিনিয়ার থাকলে তবেই বিষয়টি সহজ হবে বলে মনে করে কলকাতা পুরসভা। তাই ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা বাড়াতে নবান্নের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন কলকাতা পুর–কর্তৃপক্ষ। নবান্নের সবুজ সংকেত মিলতেই নিয়োগ হতে চলেছে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। নিয়োগে জটিলতা রইল না। শীঘ্রই তা করা হবে বলে সূত্রের খবর। মিউনিসিপ্যাল বিল্ডিং কমিটি, হেরিটেজ কমিটি এবং মেয়র পারিষদ বৈঠকের কাজকর্ম সামলাতেও রাখা হবে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার।