• পাসপোর্ট জালিয়াতিতে ধৃত পুলিশেরই প্রাক্তন আধিকারিক, DG রাজীব কুমারকে ৫টা প্রশ্ন
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • রাজ্যে পাসপোর্ট জালিয়াতির তদন্তে নেমে শুক্রবার কলকাতা পুলিশের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সাব ইন্সপেক্টর আবদুল হাইকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশই। আর এই গ্রেফতারির জেরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়েও। তেমনই পাঁচটি প্রশ্ন রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক রাজীব কুমারকে।

    রাজ্যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ, বিভিন্ন জায়গা থেকে বাংলাদেশি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্য গ্রেফতার ও পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্র নিয়ে লাগাতার সমালোচনার মুখে গত রবিবার ছুটির দিন সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। সেখানে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে দাবি করেন, সম্প্রতি পাসপোর্ট আবেদনকারীর পুলিশ ভেরিফিকেশনের ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশিকা এসেছে তাতে ব্যক্তির পরিচয়, তার ঠিকানা বা অন্য কোনও নথি যাচাইয়ের অধিকার নেই পুলিশের। শুধুমাত্র পাসপোর্ট দফতর থেকে সুপারিশ করলে সেই নথি যাচাই করতে পারে রাজ্য পুলিশ। ফলে জাল পাসপোর্ট তৈরির জন্য পুলিশকে দোষারোপ করা অহেতুক।

    এমনকী এই বিধি বদলে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে এবার থেকে রাজ্য পুলিশ পদ্ধতি অবলম্বন করবেন বলে জানান রাজীব কুমার। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের বিষয়টি সরাসরি জেলার পুলিশ সুপারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে বলেও জানান তিনি।

    প্রশ্ন ১ - পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে বর্তমানে পুলিশের কোনও ভূমিকা না থাকলে কী ভাবে ভুয়ো নথিকে ছাড়পত্র দিয়ে টাকা আদায় করলেন গ্রেফতার হওয়া অবসরপ্রাপ্ত SI আবদুল হাই?

    প্রশ্ন ২ - থানায় বসে পাসপোর্ট বিক্রির চক্র চালালেও কেন পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের কাছে তার কোনও খবর ছিল না? তাহলে কি থানা স্তরের ওপরের আধিকারিকদের কাছেও এই টাকার ভাগ যেত? বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি না হলে তো এই ভয়ঙ্কর দুর্নীতি কোনও দিন প্রকাশ্যেই আসত না।

    প্রশ্ন ৩ - পাসপোর্ট জালিয়াতির তদন্ত চলছে প্রায় মাসখানেক ধরে। তাহলে নবান্নে বসে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিতেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কী করে গ্রেফতার হয়ে গেলেন আবদুল হাই? তার মানে কি পুলিশ আধিকারিকরা এই ব্যক্তির কার্যকলাপ আগে থেকে সব জানতেন?

    প্রশ্ন ৪ - মাস দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে পাচারচক্রে পুলিশের যোগ আছে বলে জানিয়ে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পর রাজ্যের কয়েক থানার আইসিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল দফতর। কিন্তু তার পর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। তাহলে কি পাসপোর্টকাণ্ডেও তেমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তৎপরতা দেখাতেই এই গ্রেফতারি?

    প্রশ্ন ৫ - রবিবারের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য পুলিশের দক্ষতা নিয়ে বড়াই করতে শোনা গিয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে। আরজি কর-কাণ্ডে সাংবাদিক বৈঠক করে যাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ বলে উল্লেখ করেছিলেন কলকাতা পুলিশের পদস্থ আধিকারিক, পরে দেখা গিয়েছে তিনিই থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত চিকিৎসক অভীক দে। এবার খোদ ডিজি দাবি করলেন পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে পুলিশের তেমন কোনও ভূমিকা নেই, আর তার ৭ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট জালিয়াতিতে তাঁরই বাহিনী গ্রেফতার করল বাহিনীর প্রাক্তন আধিকারিককে। এতে কি পুলিশের পেশাদারিত্ব ও গোয়েন্দা দক্ষতার নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন ওঠে না?
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)