সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: পরীক্ষামূলকভাবে সফলতার পর এবার প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্র এলাকায় ‘এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গল’ কিয়স্ক চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। দু’বছর আগে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গল কিয়স্ক চালু করা হয়। একই সময়ে বিষ্ণুপুরেও একটি কিয়স্ক চালু করা হয়। সেখানে বালুচরি, স্বর্ণচরি থেকে শুরু করে টেরাকোটা সহ বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্পের সম্ভার রয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর চারজন মহিলা তা চালাচ্ছেন। পিপিপি মডেলে তৈরি ওই কিয়স্কের জনপ্রিয়তা বাড়ায় রাজ্য সরকার তার প্রসার ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সেই জন্য রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ এবং টেক্সটাইলস দপ্তরের তরফে প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে একটি করে এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গল কিয়স্ক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় পিপিপি মডেলে এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গল কিয়স্ক চালুর বিষয়ে জমি সহ অন্যান্য তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনের কাছে চাওয়া হয়েছে।
ওই কিয়স্ক পরিচালনার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যা মিঠু আচার্য বলেন, বালুচরি, স্বর্ণচরি, সিল্ক, তাঁতের শাড়ি সহ চাদর, গামছা, কুর্তি, শালোয়ার কামিজ, প্লাজো সহ মেয়েদের পরনের বিভিন্ন সামগ্রী রয়েছে।
মহিলাদের প্রসাধনী সামগ্রী এবং টেরাকোটার সামগ্রীও রাখা হয়েছে। একছাতার তলায় বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী পাওয়ায় ক্রেতারা আসছেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। বছরের অন্যান্য সময় বিক্রি কম হলেও পর্যটন মরশুমে ভালো বিক্রি হচ্ছে। কিয়স্ক ছাড়াও বিষ্ণুপুর মেলাতেও আমাদের পৃথক একটি স্টল দেওয়া হয়। এবার মেলাতেও ভালো বিক্রি হয়েছে। আমাদের কিয়স্কে বাজারের চেয়ে কিছুটা সুলভ মূল্যে ক্রেতাদের জিনিসপত্র দেওয়া হয়। তাই আরও একটু প্রচার পেলে ভালো হয়।
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, বিষ্ণুপুরের এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গলের কিয়স্ক গত দু’বছর ধরে চলছে। প্রচারের জন্য তাঁদের বিষ্ণুপুর মেলায় স্টল দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া পর্যটনস্থলে যাওয়ার পথে কিয়স্কটি অবস্থিত হওয়ায়, তা পর্যটকদের চোখে পড়বে। তবুও প্রচারের বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের তরফে ২০১৬সালে ‘এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গল’ নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়। তাতে রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানো হয়। তারই অঙ্গ হিসেবে অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় একটি করে কিয়স্ক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। পর্যটকরা যাতে একই ছাতার তলায় বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা করতে পারেন তার জন্য ওই হাব তৈরি করা হয়।
দু’বছর আগে বিষ্ণুপুরে রাজ্য সরকারের ট্যুরিস্ট লজের উল্টো দিকে একটি সুসজ্জিত কিয়স্ক চালু হয়। বিষ্ণুপুর ব্লকের ২নম্বর ক্যাম্প, যমুনাবাঁধ, ঝরিয়া ও মড়ার এলাকার চারটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে তা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। গোষ্ঠীর চারজন মহিলা পালা করে কিয়স্কে বসছেন। কিয়স্কগুলির জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। সেই কারণে রাজ্য সরকার প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে একটি করে এক্সপেরিয়েন্স বেঙ্গল কিয়স্ক চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। সেই মতো তথ্য সংগ্রহ করার কাজ চলছে।