• জলদাপাড়া, বক্সায় একমাসে হাতির হানায় আটজনের মৃত্যু
    বর্তমান | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: বনদপ্তর সচেতন করেছে বারবার। তবুও জঙ্গলে ঢোকা বন্ধ করেননি অনেকে। কেউ জ্বালানির কাঠ সংগ্রহ করতে, কেউ বা জঙ্গল ঘেঁষা নদীতে মাছ ধরতে। কখনও আবার বনকর্মীদের হাতি তাড়ানোর সময় উৎসাহী জনতার অযথা কলরব ও মোবাইলে হাতির ছবি তোলার হিড়িক। তারই খেসারত দিয়ে মাত্র একমাসে জলদাপাড়া ও বক্সার জঙ্গলে হাতির হামলায় প্রাণ হারাতে হয়েছে আটজনকে। এই আটজনের মধ্যে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে মাত্র ২০দিনের ব্যবধানে। তারপরও হুঁশ ফিরছে না অনেকের। চলছে একই পুনরাবৃত্তি। তা নিয়ে বড় আক্ষেপ বনদপ্তরের। 

    জঙ্গলে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির হামলায় মারা যাওয়ার বড় ঘটনাটি ঘটে গত ১৩ ডিসেম্বর জলদাপাড়ার চিলাপাতার জঙ্গলে। ওই দিন জঙ্গলের ভিতরে হাতির হামলায় প্রাণ যায় তিন প্রৌঢ়ার। সুখমনি লোহার, রেখা বর্মন ও চান্দামনি ওরাওঁয়ের দেহ বনদপ্তর উদ্ধারের সময়ই ৩১-সি জাতীয় সড়কে হাতির হামলায় জখম হন এক বাইক চালক। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই যুবক। এই চারজন কালচিনির দক্ষিণ মেন্দাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

    তারপরও মানুষের টনক নড়েনি। তার প্রমাণ এবার বক্সার পোড়োর জঙ্গল। ওই জঙ্গলের ভিতরে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে হাতির হামলায় প্রাণ যায় গুঞ্জমান রাভা নামে এক প্রৌঢ়ের। তাঁর বাড়ি কালচিনির দক্ষিণ পোড়োতে। লোকালয় থেকে হাতি তাড়ানোর সময় উৎসাহী জনতার কলরবে বিরক্ত হচ্ছে হাতির দল। তারই খেসারত হিসাবে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা যান বক্সার বনরক্ষী মদন দেওয়ান। জনতার কলরবে বিরক্ত হয়ে ৩ জানুয়ারি কালচিনির মধু চা বাগানে দলছুট একটি হাতি তেড়ে এসে মদনবাবুকে পায়ে পিষে চলে যায়। জঙ্গলে কাঠ আনতে গিয়ে ডিসেম্বরে বক্সায় বেঘোরে প্রাণ যায় আরও দু’জনের।

    মানুষের হুঁশ না ফেরায় আক্ষেপ যাচ্ছে না বনদপ্তরের। জঙ্গলে না ঢুকতে বনদপ্তর ধারাবাহিকভাবে এলাকায় প্রচার চালাচ্ছে। কোন এলাকায় হাতির দল দেখা গেলে বনদপ্তর এসএমএসের মাধ্যমে মানুষকে তা জানিয়ে দিচ্ছে। জঙ্গলে ঢোকা বারণ করতে বনদপ্তর এলাকায় এলাকায় মাইকিংও করছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারি বন্যপ্রাণী সংরক্ষক নভজিৎ দে বলেন, আমাদের বড় আক্ষপ, তারপরেও জঙ্গলে ঢোকা বন্ধ হচ্ছে না মানুষের। তবুও আমাদের সচেতনতা অভিযান অব্যাহত থাকবে।   
  • Link to this news (বর্তমান)