নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া এবার বারাসতে। দিনকয়েক ধরে স্বামীর মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন স্ত্রী। পড়শিদের থেকে খবর পেয়ে দরজা ভেঙে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিস। রবিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা সদর শহর বারাসতে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম সুনীল চক্রবর্তী (৭০)। তাঁর স্ত্রী বাসন্তী চক্রবর্তী মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। সুনীলবাবু অতীতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি কলকাতায় হলেও বারাসতের কাজিপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন এই দম্পতি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সুনীলবাবু ও বাসন্তীদেবী কাজিপাড়ায় একটি বেসরকারি নামী আবাসনে থাকতেন। তাঁদের একমাত্র সন্তান মারা গিয়েছেন করোনাকালে। ছেলে হারানোর যন্ত্রণায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন দম্পতি। সপ্তাহখানেক হল প্রতিবেশীরা এই দম্পতিকে বাড়ির বাইরে বেরতে দেখেননি। এরমধ্যে রবিবার বিকেলে ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরনোয় সন্দেহ হয় তাঁদের। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা খবর দেন বারাসত থানায়। পুলিস এসে দরজা ভাঙতেই অবাক হন সকলে। দেখেন, স্বামীর মৃতদেহ আগলে বসে আছেন বাসন্তীদেবী। পাশে পড়ে রয়েছে কিছু খাবার, বাসন ও জলের কয়েকটি বোতল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। কিন্তু স্ত্রী কেন আগলে রেখেছেন দেহ? গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাসন্তীদেবী আসলে মানসিক ভারসাম্যহীন। সম্ভবত, সেকারণেই স্বামীর স্পন্দনহীন দেহ দেখেও কিছু ঠাহর করতে পারেননি। পুলিস একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা স্নেহাশিস দাস বলেন, সুনীলবাবু ভালো মানুষ ছিলেন। একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এই পরিবার। সপ্তাহখানেক ধরে তাঁদের কাউকেই বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। এদিন বিকেলে পুলিস এসে দরজা খুলতে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।