পাসপোর্ট জালিয়াতি মামলায় আব্দুল–সহ ন’জন অভিযুক্তকে জেরার পরে পাওয়া তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত –– দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় পাসপোর্ট জালিয়াতির এই চক্রটি পরিকল্পনা মাফিক ভুয়ো নথি জোগাড় করে জালিয়াতির কারবার ফেঁদে বসেছিল।
মনোজ গুপ্তা, ধীরেন ঘোষ, মোক্তার আলাম এবং সমরেশ বিশ্বাসেরা ধরা পড়তেই মোবাইল থেকে অনেক কিছুই ডিলিট করে দেন আব্দুল। সেই সব ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধার হলে, আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আরও তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পাসপোর্ট মামলায় মনোজ, ধীরেন, সমরেশ, মোক্তার এবং আব্দুলের মোবাইলগুলি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আলিপুর আদালতের অনুমতি নিয়ে সেগুলি ইতিমধ্যেই সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)–তে পাঠানো হয়েছে। আপাতত সেই রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্তকারীরা।
জেরায় জানা গিয়েছে, সমরেশের মাধ্যমে আব্দুলের সঙ্গে লেনদেন হতো। কখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, আবার কখনও নগদে টাকা নিতেন আব্দুল। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের নামে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দাবি করতেন আব্দুল। এ ভাবেই প্রায় ১৫০টি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করেছেন তিনি। যদিও তার মধ্যে ৫১টি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পুলিশের হাতে এসেছে।
২০২৩–এর অক্টোবরে অবসর নেন প্রাক্তন এই এসআই। কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)–এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আব্দুল। কর্মজীবনের শেষ চার বছরে পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র যাচাই করতেন তিনি। দেখা গিয়েছে অবসরের পরের এক বছরে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক ১২ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে।
তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ওই টাকার উৎস কী? পাসপোর্ট জালিয়াতির সঙ্গে ওই টাকার কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের দাবি, কয়েকজন হোমগার্ড এই পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে নথিপত্র জোগাড়ে সাহায্য করতেন আব্দুলকে। আবেদনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন ওই হোমগার্ডরা। তাঁদেরও একটি তালিকা তৈরি করছে পুলিশ।