• সরকারি রাস্তা ‘ভাড়া’ দিয়েই চলছে ব্যবসা, হাঁটাচলা দায়
    এই সময় | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • দিব্যেন্দু সিনহা, জলপাইগুড়ি

    বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সরকারি রাস্তা। জলপাইগুড়ির দিনবাজারে করলা সেতু থেকে মার্চেন্ট রোড পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের রাস্তা–দখলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। স্থায়ী দোকানের সামনের রাস্তা ভাড়া দেওয়া হচ্ছে অন্য ব্যবসায়ীদের। বড় বড় একাধিক দোকানের সামনে ঠেলাগাড়িতে পসরা সাজিয়ে বসছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। সেখানে বসতে দেওয়ার জন্য দিনে ১০০–৩০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

    সাত বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এই কর্মকাণ্ড। যার জেরে পথচারীরা ঠিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারছেন না। সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে বাজারের রাস্তা। অপরিসর রাস্তায় টোটো–ভ্যান রিকশা–মোটরবাইক–সাইকেলে তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। নাজেহাল অবস্থা বাসিন্দাদের।

    বাজারের কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী যে এর নেপথ্যে তা প্রায় সকলেরই জানা। দিনের পর দিন সরকারি রাস্তা ভাড়া দিয়ে বাজারের সমস্যা তৈরির পিছনে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে তৎপর হয়েছে ব্যবসায়ী সমিতিও। দিনবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি আগেও প্রশাসন এবং পুরসভাকে অভিযোগ করেছিল।

    সমিতির সভাপতি মলয় সাহা বলেন, ‘মার্চেন্ট রোড শহরের প্রধান রাস্তাগুলির একটি। প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। বাইরে থেকে যাঁরা হোলসেল দোকানে আসেন তাঁরাও এই রাস্তা ব্যবহার করেন। বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের চলাচলেই কঠিন হয়ে পড়ছে তারপর আবার পাইকারি সামগ্রী নিয়ে যাওয়া আরও কঠিন। ফুটপাথ দখল হয়ে যাওয়ায় কোনও গাড়ি বাজারের মধ্যে যেতে পারছে না। বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে। এই নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করতে প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি।’

    যাঁদের বিরুদ্ধে বাজারের ফুটপাথ দখল করে যানজট তৈরির অভিযোগ উঠছে তাঁরা কিন্তু দাবি করেছেন, ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছেন সেখানকার দোকানিরাই। তার জন্য তাঁরা টাকাও দিচ্ছেন। ফল বিক্রেতা রবিন্দর শা বলেন, ‘সংসার চালাতে হবে। কিন্তু ব্যবসা করার জায়গা নেই। তাই বড় দোকানকে মাসে টাকা দিয়ে ঠেলা বসিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে।’

    একই বক্তব্য নমাজ আলি, আনিমুল আনসারিদের। তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন টাকার বিনিময়ে ব্যবসার সুযোগ দিচ্ছেন বড় দোকানিরাই। এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার সরিতা প্রসাদ শা গুপ্তা বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে এ ভাবে দোকানের সামনের রাস্তা অন্য ব্যবসায়ীদের দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। পুরসভা একাধিকবার অভিযান চালিয়ে মাইকে প্রচার করে সতর্ক করেছে। তার পরেও একই চিত্র। ফের অভিযান চালানো হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)