• কলকাতার ব্যবসায়ী খুনে দোষী সাব্যস্ত জামতাড়ায়, সাজা ঘোষণা ১০ জানুয়ারি
    এই সময় | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • সাড়ে তিন বছর আগের ঘটনা। কলকাতার এক ব্যবসায়ীর গলার নলিকাটা দেহ মেলে সাইবার ক্রাইমের আঁতুড়ঘর ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ায়। অভিযোগ ছিল, বিয়ারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বেহুঁশ করে কলকাতা থেকে গাড়ির ডিকিতে ভরে নিয়ে যাওয়া হয় সইফ খান নামে ওই ব্যবসায়ীকে। পরে নলি কেটে খুন করা হয় তাঁকে। এই খুনে অভিযুক্ত দু’জনকে সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত করল জামতাড়ার জেলা আদালত।

    ১০ জানুয়ারি সাজা ঘোষণা হবে বলেই আদালত সূত্রে খবর। ছেলের খুনে অভিযুক্তদের ফাঁসি চেয়ে সরব হয়েছেন সইফের মা সালেহা খাতুন। তাঁর সাফ কথা, ‘হামে ইনসাফ চাহিয়ে। উন দোনো কো ফাঁসি দেনা হোগা।’

    ঠিক কী ঘটেছিল?

    ২০২১–এর ১৭ অগস্ট ঘটনার সূত্রপাত। নিউ মার্কেটের রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের বাসিন্দা সইফ বাড়ি থেকে স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে আর ফেরেননি। পরের দিন, ১৮ অগস্ট তাঁর দেহ মেলে ঝাড়খণ্ডের মিহি জামতাড়ার একটি খেতে। তদন্তে নামে মিহি জামতাড়া থানা। নিউ মার্কেট থানায় আসে ওই থানার একটি বিশেষ টিম। নৃশংস ওই খুনের ঘটনায় ২১ অগস্ট বেনিয়াপুকুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মূল অভিযুক্ত আফতার আলম ও তার শাগরেদ নজরে আলমকে।

    কী ভাবে খুন হন সইফ?

    বছর সাঁইত্রিশের সইফের কলকাতায় কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা ছিল। ব্যবসার সুবাদে অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর আলাপ। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তরা সইফের কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা ধার িনয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দেয়নি। টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন সইফ। টাকা ফেরানোর টোপ দিয়ে সইফকে ডাকে অভিযুক্তরা। তাঁকে বিয়ারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তা খাইয়ে অজ্ঞান করে ভরা হয় গাড়ির ডিকিতে।

    সেই অবস্থায় গাড়ি যায় জামতাড়ায়। মিহি জামতাড়ার খেতের মধ্যে গলা কেটে খুন করে ফেলে রাখা হয় দেহ। মিহি জামতাড়া থানা স্থানীদের মাধ্যমে ১৮ অগস্ট খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। নিহতের পকেটে মেলে তাঁর স্কুটির চাবি। সেই সূত্রে মেলে কলকাতার শো–রুমে কোড, ফোন নম্বর। শো–রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে নিহত যুবক কলকাতার বাসিন্দা।

    কারণ ওই শো–রুমের মালিক সইফের পরিবারকে চিনতেন। শো–রুমের মালিকের কাছে মিহি জামতাড়া পুলিশের ফোন যেতেই, তিনি নিহতের ছোট ভাই ইমরানকে ফোন করেন। সেখান থেকেই সইফের পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তাঁরাই সইফের দেহ শনাক্ত করেন।

    এ বিষয়ে নিহতের দাদা কাইস খান বলেন, ‘ভাইয়ের খুনের কিনারা হয়েছে। এর মূল কৃতিত্ব মিহি জামতাড়ার সাব ইনস্পেক্টর অরবিন্দ কুমার সিংয়ের। তিনি সব সময়ে আমাদের পাশে ছিলেন। ভাইকে তো আর ফিরে পাব না। তবে দোষীদের শাস্তি হলো, এটাই শান্তি।’

  • Link to this news (এই সময়)