স্কুলে ভর্তি হতে গেলেই চাওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা, না দিলেই মারধোর! প্রতিবাদে উত্তাল মুর্শিদাবাদ ...
আজকাল | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুলে ভর্তির জন্য নেওয়া হচ্ছে 'অতিরিক্ত' টাকা এবং তা দিতে অস্বীকার করায় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে 'মারধোর' করেছেন। ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র বিক্ষোভে সোমবার উত্তাল হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানার খয়রামারী হাই স্কুল। প্রতিবাদে পড়ুয়ারা দীর্ঘক্ষণ গ্রামের রাস্তা ও ধনিরামপুর-ডোমকল রাজ্য সড়ক অবরোধ করে।
সাগরপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পথ অবরোধ তুলতে গেলে উত্তেজিত ছাত্র-ছাত্রী পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। শুধু তাই নয়, বিক্ষোভের সময় ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের দরজায় তালাও লাগিয়ে দেয়। কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীকে সকালে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দাবি, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান যতক্ষন না তাদের কাছে ক্ষমা চাইবেন, তারা এই বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে। সোমবার দুপুর নাগাদ বিডিও এবং সাগরপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক স্কুলে পৌঁছে বিক্ষোভরত ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
স্কুলের সামনে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা ঘটনাপ্রসঙ্গে জানান, স্কুলে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার সময় প্রথমে ভর্তির জন্য ৪০০ টাকা 'ফিজ' ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু অভিভাবকের অনুরোধে ভর্তির টাকা কমিয়ে ৩০০ টাকা করা হয়। অভিযোগ, স্কুলে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হতেই স্থানীয় খয়রামারী পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠুন বিশ্বাসের ভাই তথা ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওহায়েদুজ্জামান বিশ্বাস ওরফে রিন্টু ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের স্কুলে ভর্তির জন্য বর্ধিত 'ফিজ' দিতে চাপ দিতে থাকেন।
ছাত্রছাত্রীরা আরও জানান, পঞ্চায়েত প্রধান এবং তার ভাইয়ের দাবি মেনে অনেক ছাত্র-ছাত্রী বর্ধিত 'ফিজ' দিতে রাজি না হওয়ায় শনিবার পঞ্চায়েত প্রধান নিজে উপস্থিত থেকে এবং কয়েকজন বহিরাগত দুষ্কৃতিদের দিয়ে স্কুলের কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার স্কুল শুরুর আগেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের দাবি, ছাত্রছাত্রীদের মারধোর করার জন্য পঞ্চায়েত প্রধানকে ক্ষমা চাইতে হবে। দীর্ঘক্ষণ ধরে পঞ্চায়েত প্রধান এলাকায় উপস্থিত না হওয়ায় বিক্ষোভ চালিয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীরা। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান মিঠুন বিশ্বাস তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, 'বেশকিছুদিন ধরে স্কুল চত্বরের আশেপাশে কিছু বহিরাগত মাদক বিক্রি করছে। সেই ঘটনার খবর পেয়ে আমি স্কুলে গিয়ে বহিরাগতদের স্কুল থেকে বার করে দিয়েছিলাম। কোনও ছাত্রছাত্রীকে মারধর করিনি। চক্রান্ত করে আমার বিরুদ্ধে ছাত্রদের লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ১০০ টাকা স্কুলের অতিথি শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে।'