• 'আবার একটা বাঘ পাঠিয়ে দিয়েছে...' ওড়িশার উপর ক্ষুব্ধ মমতা
    আজ তক | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • বাংলার জঙ্গলে আবারও একটি বাঘ প্রবেশ করায় রাজ্য জুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি সরাসরি প্রতিবেশী রাজ্যের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, "তোমাদের বাঘ তোমরা সামলাও। গ্রামে আতঙ্ক না ছড়ায় সেটাও তোমাদের দায়িত্ব।"

    মাত্র পাঁচ দিন আগেই জিনত নামের একটি বাঘিনিকে ধরতে বাংলার পাঁচটি জেলার বন দফতরকে কার্যত হিমশিম খেতে হয়। সেই পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার পর ফের আরও একটি বাঘ বাংলায় প্রবেশ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "একটা বাঘ পাঁচটা জঙ্গল পেরিয়ে পাঁচটা জেলা পার করল। আমরা উদ্ধার করলাম। দিনরাত খেটে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন আসতে শুরু করল—ফেরত দাও। এখন আবার একটা বাঘ এসেছে।"

    ওড়িশা সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
    মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে না না করে ওড়িশা সরকারের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, "তোমাদের বাঘ তোমরা টেক কেয়ার করবে। আমরা রেসকিউ অপারেশন করছি আর তোমরা শুধু ফোন করে বাঘ ফেরত চাইছো। যদি তোমাদের জায়গা না থাকে, আমাদের জানাও। আমরা বাঘটাকে চিরকালের জন্য রাখব।।"

    হাতি এবং বাঘের কারণে বাড়তি চাপ
    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, রাজ্যে হাতির সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে এবং বনকর্মীদের এ নিয়ে নিয়মিত কাজ করতে হচ্ছে। "হাতি ধান খেতে ভালোবাসে। বনভূমিতে খাদ্যের অভাবে তারা গ্রামের দিকে আসে। এর সঙ্গে এখন বাঘের মতো বড় সমস্যাও সামলাতে হচ্ছে," তিনি বলেন।

    বাঘ উদ্ধারের অভিজ্ঞতা
    জিনত বাঘিনিকে ধরার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমাদের বনকর্মীরা ৫ রাত না ঘুমিয়ে কাজ করেছেন। পাঁচটি জেলা কার্যত আতঙ্কে বন্ধ ছিল। মানুষ ঘর থেকে বেরোতে পারেনি, স্কুল বন্ধ করতে হয়েছিল। আমরা এই আতঙ্ক সহ্য করলাম, আর পরে তোমরা শুধু বলছো বাঘ ফেরত দাও। আমি ওড়িশা সরকারকে বলব উদ্ধার করে নিয়ে যেতে।"

    ওড়িশা সরকারকে সতর্ক বার্তা
    মুখ্যমন্ত্রী ওড়িশা সরকারের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেন, "প্লিজ সেন্ড ইউর ফরেস্ট টিম অ্যান্ড রেসকিউ ইউর টাইগার। ডোন্ট ব্লেম আস।" তিনি আরও জানান, "তোমাদের যদি বাঘ রাখার জায়গা না থাকে, আমাদের জানাও। আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।"

    বারবার বাঘ প্রবেশের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী ওড়িশা সরকারের থেকে কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি করেছেন। বনকর্মীদের ওপর চাপ বাড়ছে এবং এর ফলে গ্রামীণ অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বাংলার বনে বাঘের এই আগমন বারবার কেন ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওড়িশা বন দফতরের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি যাতে না ঘটে, সে বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
  • Link to this news (আজ তক)