এই মাস জানুয়ারি। এই মাসেই জন্মেছিলেন নেতাজি।আর সেই মাসেই নেতাজি ইস্যুতে সরগরম বাংলার রাজনীতি। একদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর অপরদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
আসলে কুণাল ঘোষ সম্প্রতি একটি মন্তব্য করেছিলেন। আর তারপর থেকেই এনিয়ে তীব্র শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। অনেকের মতে, রাজনৈতিক কাদাছোঁড়াছুড়ি থাকবেই। কিন্তু বাংলার কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সফলতা বা ব্যর্থতা তা নির্ধারন করার জন্য কেন নেতাজির মতো মহান নেতার প্রসঙ্গ আনা হচ্ছে?
সুকান্ত মজুমদারের পোস্ট করা ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে কুণাল ঘোষ সংবাদমাধ্যমের সামনে বলছেন, 'রাজনীতিতে যদি দেখি সত্যি কথা বলতে কী, খুব অপ্রিয় সত্যি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও কিন্তু আলাদা দল নিয়ে দলীয় রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি। তিনি একটা ঐতিহাসিক বিপ্লবী। স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি নেতাজি। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে দল গড়ে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রণব মুখোপাধ্য়ায় দল গড়ে ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলার মাটিতে আলাদা দল গড়ে কেউ কোনও নেতা বা নেত্রী সফল হয়ে থাকেন তাহলে সেটা একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।'
অনেকের মতে, কার্যত আলাদা দল গড়ে সংসদীয় রাজনীতিতে কে সফল আর কে ব্যর্থ সেটা বোঝানোর জন্য কুণাল নেতাজির প্রসঙ্গ এনেছিলেন। কিন্তু অনেকের প্রশ্ন কুণালের এই যুক্তি কতটা যুক্তিযুক্ত, কতটা শোভন? তিনি কি তবে অন্তত একটি ইস্যুতে হলেও মমতার সঙ্গে নেতাজির তুলনা করছেন?
এবার এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষকে তীব্র আক্রমণ করলেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি লিখেছেন,
'কি ভীষণ স্পর্ধা!
ঔদ্ধত্য এবং রাজনৈতিক অশিক্ষা ঠিক কোন স্তরে গিয়ে পৌঁছালে কোনও ব্যক্তি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ব্যর্থতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করার দুঃসাহস দেখাতে পারেন!
রাজ্যের অপদার্থ মুখ্যমন্ত্রীর পদলেহন করতে গিয়ে প্রলাপের সমস্ত সীমা অতিক্রম করে গিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
তাই স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মূল সেনানী, আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠাতা প্রণম্য 'নেতাজী' সম্পর্কে এই ধরনের চরম আপত্তিকর মন্তব্য করতেও ন্যূনতম লজ্জাবোধ হচ্ছে না তাঁর।
তিনি যেমন নির্লজ্জতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন, ঠিক তেমন ভাবেই তাঁর দলের অনুগামীরা যাঁরা এই লজ্জাজনক মন্তব্যকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন, তাঁরাও একইভাবে রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্কস্বরূপ।
ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির অন্যায় স্বার্থ চরিতার্থ করতে অবাধে পশ্চিমবঙ্গে মৌলবাদী ইসলামীদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। কিন্তু এবার রাষ্ট্রের গর্ব নেতাজীকেও অসম্মান করল তৃণমূল। ধিক্কার!' লিখেছেন সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্তর পোস্টে জবাব দিয়েছেন অনেকে। এক নেটিজেন লিখেছেন, দেখবেন একদিন পার্টি থেকে জুতো খেয়ে বেরোতে হবে। নেতাজিকে কোথায় নিয়ে গেল। অপর একজন লিখেছেন নেতাজিকে নিয়ে বিজেপির আদিখ্যেতা মানায় না। এই ভিডিয়োটাতে নেতাজিকে অসম্মান করা হয়নি আপনাদের পূর্বসূরীরা নেতাজির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।