চিনের হাসপাতালের কিছু ভিডিয়ো মোবাইলে ঘোরাফেরা করতেই আতঙ্কের জন্ম হয়। সেটা কয়েকগুণ বেড়ে যায় শেষ দু’দিনে। জানা যায়, ভারতে HMPV-র অস্তিত্ব মিলেছে কয়েকজনের শরীরে। তার মধ্যে রয়েছে তিন মাসের এক শিশু কন্যা, আট মাসের এক শিশু পুত্র। তা হলে কি ভারতে ঢুকে পড়ল এই ভাইরাস?
পৰ্ণালী বলেন, ‘প্রথমেই বলি কেস পাওয়া গিয়েছে, ভাইরাস দেশে ঢুকে পড়ল, বিষয়টি এরকম নয়। এটিও এক ধরনের রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (RTI) ভাইরাস। এই ভাইরাস আগেই ছিল। নভেম্বর মাসে যেটা পাওয়া গিয়েছে, সেটার টেস্ট তো আগেই হয়ে গিয়েছে। ফলে নতুন করে ভাইরাস এসেছে বলার প্রয়োজন নেই।’
তবে, এই ভাইরাস থেকে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও বিষয় আছে? তাঁর কথায়, ‘এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এটা নতুন কোনও ভাইরাস নয়। এদের জেনেটিক স্ট্রাকচার আমাদের জানা। গবেষণায় ১৯৫০ সাল থেকেই এর অস্তিত্ব মিলেছে।’
এই ভাইরাস থেকে কি অতিমারী হতে পারে? ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এই ভাইরাসে অনেকেই সংক্রমিত হন। এর পরেও এটাকে অতিমারী বলা হয় না। কারণ এই ভাইরাস তুলনামূলক কম ক্ষতিকারক। পাশাপাশি এটি আরএসভি (Respiratory Syncytial Virus) ভাইরাসের মতোই। আরএসভির চিকিৎসার মতোই এই ভাইরাসেরও চিকিৎসা করা যায়। HMPV-র কোনও ভ্যাকসিন নেই বলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
যদিও এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আসছে চিনের কথা। যে চিন থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল, ভারতের সেই প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকেই ফের আরও এক ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু বলেই জানাচ্ছেন অনেকে। পৰ্ণালী বলেন, ‘আসলে চিন এই ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে হু-কে অনেকটাই পরে রিপোর্ট করে। আরটিপিসিআর করার ফলে HMPV-র রিপোর্ট বেশি হচ্ছে। চিনের যেটা করা উচিত, আরটিপিসিআর রিপোর্ট দেখে HMPV-র নতুন কোনও স্ট্রেন কি না সেটার একটা রিপোর্ট জমা দেওয়া উচিত। বিশ্বের সকলকে সেই বিষয়ে জানানো উচিত।’
তাঁর দাবি, HMPV-র সাধারণত চারটি স্ট্রেন রয়েছে। আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেনে এই ভাইরাস ঘটিত রোগ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই ভাইরাসের নতুন কোনও স্ট্রেন পাওয়া যায়নি। তাই এই HMPV সংক্রমণ নিয়ে বা কতজন সংক্রমিত হলো, সেই সংখ্যা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।