• ৪ ফুট লাফ দিয়ে সামনে হাজির বাঘ, পালিয়ে প্রাণরক্ষা লাঠিধারী বনকর্মীর
    বর্তমান | ০৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বারুইপুর: অসীম সাহস বনকর্মী কালীপদ বেরার। বিশাল আকারের বাঘকে দেখেও ভয় পাননি। উল্টে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গেলেন। এ দুঃসাহস সহ্য হয়নি বাঘটির। কান ফাটানো হুঙ্কার দিয়ে চোখের নিমেষে চার ফুট লাফ। তারপর কালীর প্রায় সামনে। রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায় কালীপদর। প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করে দৌড় দেন। সোমবার মৈপীঠের দক্ষিণ বৈকুণ্ঠপুরে ড্রেনের মুখ এলাকায় বাঘ খুঁজতে গিয়ে প্রাণ হাতে বাড়ি ফিরলেন কালীপদ ও অন্যান্য বনকর্মীরা।


    গ্রাম লাগোয়া জঙ্গল। সেখানে ঘাপটি মেরে রয়েছে বাঘটি। তার আতঙ্কে সিঁটিয়ে গোটা গ্রাম। কোথায় আছে হিংস্র বাঘ? কেউ জানে না। খুঁজতে জঙ্গলে শুরু হয় তল্লাশি। বনকর্মীরা লাঠি হাতে খোঁজা শুরু করেন। সেই দলেই ছিলেন কালীপদ। তারপর বাঘের সঙ্গে অসম দ্বৈরথে পিছু হটে কালী। হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন, ‘এত বড় বাঘ ভাবতেও পারিনি। লাফ দিয়ে একেবারে আমার সামনে। পালিয়ে কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে আছি।’ জানা গিয়েছে, এদিন সকালে মৈপীঠের বৈকুন্ঠপুর পঞ্চায়েতের কিশোরীমোহনপুর শ্রীকান্তপল্লি এলাকায় প্রথম দেখা মেলে বাঘের পায়ের ছাপের। কয়েকজন মৎসজীবী নদীতে কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার সময় বাঘটির দেখাও পান। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শঙ্কর দাস বলেন, ‘রাতে গ্রামের মধ্যে পড়ে থাকা মরা ষাঁড়কে বাঘ টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিছুটা খেয়ে তারপর ফেলে রেখে যায়। জানা গিয়েছে, মাকরি নদী পার হয়ে লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলে এসেছে বাঘটি।’


    বাঘ এলাকায় ঘুরছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতেই সন্ধ্যা থেকে রাত পাহারার ব্যবস্থা করেছে বনদপ্তর। মশাল জ্বালিয়ে টহল দেওয়া হচ্ছে জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তায়। অন্যদিকে গোটা গ্রামে নেমেছে আতঙ্ক। ঘরবন্দি হয়ে রয়েছে মানুষ। গৃহপালিত পশুকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিস মাইকে সতর্ক করছে গ্রামবাসীদের। বনদপ্তরের চিতুরি, নলগড়া বিটের কর্মীরা, রেঞ্জার অফিসাররা বোট নিয়ে টহল দিচ্ছেন নদীতে। ঘটনাস্থলে জেলা বনবিভাগের কর্তারা পৌঁছেছেন। প্রচুর পরিমাণে বাজি মজুত করাও হয়েছে। 


    দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, ‘আজমলমারি এগারো নম্বর জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়েছে। পায়ের ছাপ পর্যবেক্ষণ করে চলছে তল্লাশি অভিযান। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে জাল দিয়ে। গ্রামের বাসিন্দাদের আতঙ্ক দূর করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)