• ঋণ মেটালেও বকেয়া চেয়ে চিঠি, মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
    এই সময় | ০৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: মাইক্রোফিনান্স কোম্পানি খুলে লোন দেওয়ার নামে মহিলাদের প্রতারিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। ঋণ মিটিয়ে দেওয়ার পরও বকেয়া চেয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। সোমবার এই অভিযোগ নিয়ে এনজেপি থানার দ্বারস্থ হন শিলিগুড়ির চুনাভাটির কৃষ্ণা দত্ত নামে এক মহিলা। তাঁর অভিযোগ, একটি মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির থেকে ১০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিলেন তিনি।

    কয়েক কিস্তির মাধ্যমে টাকা মেটানোর পরও টাকা চেয়ে চিঠি এসেছে তাঁর কাছে। এমনকী, দশ দিনের মধ্যে টাকা না মেটালে মহিলার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি ওই সংস্থার স্থানীয় অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলে তাঁকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়।

    পাশাপাশি ঋণ মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে একটি সার্টিফিকেট দেওয়ার আশ্বাসও দেয় সংস্থাটি। কিন্তু তারপর সমস্যার সমাধান তো হয়ইনি। উল্টে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়ে নোটিস চলে আসে কৃষ্ণার কাছে। তখনই এনজেপি থানার দ্বারস্থ হন মহিলা। সোমবার সকালে পুরো বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, শুধু কৃষ্ণা নন, আরও দু’– তিন জনের কাছে একইরকম ভাবে বকেয়া চেয়ে চিঠি এসে।

    অভিযোগকারী বলেন, ‘এজেন্টের মাধ্যমে সমস্ত টাকা মিটিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই এজেন্ট কোম্পানিতে কোনও টাকা জমা দেয়নি। বিষয়টি স্থানীয় ম্যানেজারকে জানালে তিনি বলেন, কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু আমার কাছে সংস্থার হেড অফিস থেকে ঋণ মিটিয়ে দিতে আইনি নোটিস এসেছে। তাই আজ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’ অভিযুক্ত সংস্থার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দরজায় তালা ঝুলছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এনজেপি থানার চুনাভাটি এলাকায় একটি মাইক্রোফিনান্স সংস্থা অফিস খোলে। সেখানে দশ জন করে মহিলাকে নিয়ে এক–একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়। ওই গ্রুপের মহিলাদেরই ঋণ দেওয়া হয়। সংস্থার একজন এজেন্টের মাধ্যমে গ্রুপগুলিতে ঋণ বণ্টন হতো। ওই এজেন্টই আবার কিস্তির টাকা তুলে সংস্থায় জমা করতেন।

    অভিযোগ, কৃষ্ণা–সহ গ্রুপের আরও তিন মহিলা ঋণ নেন। সকলেই এজেন্টের মাধ্যমে ঋণের পুরো টাকা মিটিয়ে দেন। যখন সবাই নো অবজেকশান সার্টিফিকেটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখনই প্রত্যেকের বাড়িতে সংস্থার হেড অফিস থেকে চিঠি আসে। চিঠিতে ঋণ মেটানোর জন্য সময়সীমা নির্ধারিত করে দেওয়া হয়।

    এমনকী, ওই সময়ের মধ্যে ঋণ না মেটালে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপর কৃষ্ণা এজেন্টকে বিষয়টি জানানোর পরেই সে গা ঢাকা দেয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় অফিসের ম্যানেজারের আশ্বাসের পরও ঋণ মেটাতে সংস্থার সদর দপ্তর থেকে বারবার তাগাদা দিয়ে চিঠি আসতে থাকায় পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিন চুনাভাটিতে গিয়ে দেখা যায়, অফিস তালাবন্ধ। ম্যানেজারের ফোনের সুইচড অফ। এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসিপি রাকেশ সিং বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)