সুজিত রায়, আলিপুরদুয়ার
সরকারি নিয়ম মাফিক দুটো টোল প্লাজার মধ্যে দূরত্ব থাকার কথা ৬০ কিলোমিটার। কিন্তু এ যেন উলটপূরাণ। অসম–বাংলা সীমানার অদূরে শ্রীরামপুরের তেলিপাড়ায় নতুন করে তৈরি হয়েছে আরও একটি টোল প্লাজা। আর এই নিয়মের বাইরে গজিয়ে ওঠা টোল প্লাজা নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ জমেছে জন সাধারণের মধ্যে।
তবে, অভিযোগের দায় এ–ওর ঘাড়ে ঠেলে দিচ্ছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষোর কর্তারা। এমনকী, সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি টোল প্লাজার ম্যানেজার। তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা বেসরকারি সংস্থা। টোলের রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছি। এ নিয়ে যা বলার জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষ বলবে।’
পশ্চিমবঙ্গের কামাখ্যাগুড়িতে একটি টোল প্লাজা রয়েছে। অসমের কোকরাঝাড় জেলার পাটগাঁওয়ে রয়েছে আরও একটি টোল। এই দুটো টোলের দূরত্ব ৬০ কিমি। কিন্তু তার ১৫ কিমির মধ্যেই শ্রীরামপুরের তেলিপাড়ায় নতুন তৈরি হয়েছে আরেকটি টোল প্লাজা। অসমের স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস রায়, বিকি প্রসাদরা এ কথা জানিয়ে বললেন, ৮ ডিসেম্বর থেকে এখানে নতুন একটি টোল বসানো হয়েছে। ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন এলাকার লোকজন। গাড়ি নিয়ে কোথাও যেতে হলে দ্বিগুন টাকা গুনতে হচ্ছে তাঁদের।
এদিকে, এক মহলে অভিযোগ জানাতে গেলে অন্য মহলের দিকে আঙুল দেখিয়ে দায় সারছে দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষের উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় আধিকারিক শৈলেন্দ্র শম্ভূ জানিয়েছেন, টোলটি যেহেতু অসমে, ফলে বিষয়টি অসমের বঙ্গাইগাঁও ন্যাশানাল হাইওয়ে (এনএইচ) দেখভাল করে। কিন্তু বঙ্গাইগাঁও এনএইচ–এর সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। তারা জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি দিল্লির একটি বিভাগ দেখাশোনা করে। এর থেকেই পরিষ্কার, হয় তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই, নয় তারা মুখ খুলতে চাইছেন।
অসমের গোসাইগাঁও–এর মহকুমা শাসক মৃদুল শিবহারের কথায়, ‘এই টোল ট্যাক্স নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে বঙ্গাইগাঁও এনএইচএ–এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা এটা দেখেন না। এর জন্য আলাদা শাখা রয়েছে। যা দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়। এর বেশি তিনি কিছুই বলতে পারেননি।’
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন দপ্তরের ২০০৮ সালের নিয়ম অনুযায়ী, দুটি টোল প্লাজার দূরত্ব হবে ৬০ কিমি। এদিকে, কামাখ্যাগুড়ির টোল প্লাজা থেকে তেলিপাড়ায় চালু হওয়া টোলটির দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। অসমের গোসাইগাঁও–এর বাসিন্দা দেবাশিস আরও বললেন, ‘চিকিৎসার জন্য অসম থেকে বহু মানুষ বাংলায় যান। তাঁদের এখন দ্বিগুন টোল ট্যাক্স দিতে হচ্ছে।’ এর জন্য সরকারকেই দায়ী করে অসমের স্থানীয় বাসিন্দারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।