এই সময়: শেষ বার এমন ঘটনা ঘটেছিল ৮ ডিসেম্বর ২০২২। আগামী দিনে ফের ঘটবে ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৭ তারিখে। তার মাঝে একটা সুযোগ থাকছে ১৫ জানুয়ারি। ওই দিনই মঙ্গলের ‘প্রতিযোগ’। অর্থাৎ মহাকাশে পৃথিবীর যে দিকে সূর্য থাকবে, তার ঠিক ১৮০ ডিগ্রি উল্টো দিকেই দেখা যাবে লালগ্রহকে। দূরত্বের নিরিখে সূর্যের চতুর্থ গ্রহকে দেখার এ বছর এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। অবশ্য, এই ঘটনার তিন দিন আগে অর্থাৎ ১২ জানুয়ারি মঙ্গল চলে আসবে পৃথিবী থেকে ‘মাত্র’ ন’কোটি ৬০ লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে। যাকে বলা যায়, একেবারে ‘দোরগোড়ায়’।
‘ওখানে’ নাকি বুদ্ধিমান প্রাণীদের বসবাস। তারা এতটাই বুদ্ধিমান যে পৃথিবী দখলের পরিকল্পনা পর্যন্ত করেছিল। এমকী প্রায় দখলও করে ফেলেছিল। নিতান্ত কপালজোরে কী ভাবে পৃথিবী বেঁচেছিল, তার বর্ণনা পাওয়া যায় এইচজি ওয়েলশের ‘ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস’ উপন্যাসে। পরবর্তী কালে অবশ্য পৃথিবীর প্রতিবেশী মঙ্গলে বুদ্ধিমান কোনও প্রাণীর অস্তিত্ব একরকম নাকচ করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
‘মাঙ্গলিক’–দের অস্তিত্ব না থাকলেও মঙ্গলকে নিয়ে পৃথিবীর আগ্রহের কমতি নেই। সেই আগ্রহই কিছুটা পূর্ণ হতে চলেছে রবিবার। বিড়লা তারামণ্ডলের বিজ্ঞান আধিকারিক বিপাশ দাশগুপ্ত ‘এই সময়’–কে বলেন, ‘১২ জানুয়ারি মঙ্গল পৃথিবীর খুব কাছে আসতে চলেছে।’ তিনি জানিয়েছেন, সূর্য থেকে মঙ্গলের দূরত্ব ২০ কোটি কিলোমিটার থেকে ২৫ কোটি কিলোমিটারের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। অন্য দিকে সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ কিলোমিটার থেকে ১৫ কোটি ২০ লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে।
বিপাশ দাশগুপ্তের কথায়, ‘দুই গ্রহের মধ্যের সর্বোচ্চ দূরত্ব যেমন ৪০ কোটি কিলোমিটার হতে পারে, তেমনই সর্বনিম্ন দূরত্ব মাত্র সাড়ে পাঁচ কোটি কিলোমিটারও হতে পারে। ১২ জানুয়ারি এই দুই গ্রহ পরস্পরের ন’কোটি ৬০ লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে এসে পড়বে।’
শহরের শখের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সংগঠন স্কাই ওয়াচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা এই মহাজাগতিক ঘটনায় অত্যন্ত উত্তেজিত। সংগঠনের পক্ষ থেকে দীপঙ্কর দে বলেন, ‘এখন সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরেই পূর্ব আকাশে মঙ্গলকে অত্যন্ত উজ্জ্বল ভাবে দেখা যাচ্ছে। এই ঔজ্জ্বল্য সবচেয়ে স্পষ্ট হবে ১৫ জানুয়ারি। ওই দিন মঙ্গলের প্রতিযোগ। অর্থাৎ পৃথিবীর যে দিকে সূর্য তার ঠিক উল্টো দিকে মঙ্গল থাকবে।’ শীতের সন্ধ্যায় আকাশে মেঘের সম্ভাবনা তেমন নেই বলে রাতের আকাশে মন মজেছে যাঁদের, তাঁরা উৎসাহে অপেক্ষা করছেন লালগ্রহকে ‘কাছ থেকে’ দেখার জন্য।