এই সময়: রাজ্য সরকারের দপ্তরগুলিতে কর্মী সংখ্যা কত, কত পদ শূন্য রয়েছে— সরকারি দপ্তরের প্রধানদের চিঠি দিয়ে জানতে চাইল নবান্নর প্রশাসনিক কর্মিবর্গ দপ্তর। এই দপ্তরই সরকরি কর্মীদের নিয়ন্ত্রক। যার মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই তথ্য দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানদের জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনিক কর্মিবর্গ দপ্তর থেকে সমস্ত সরকারি দপ্তরকে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, সচিবালয় ও ডিরেক্টরেটে লোয়ার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট, আপার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট, হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সেকশন অফিসারের কত অনুমোদিত পদ রয়েছে, কত জন এখন কর্মরত, সে সব বিস্তারিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই দপ্তরগুলির কর্মী সংখ্যা নিয়ে তথ্য তলবে প্রশ্ন উঠেছে, ভোটের দিকে তাকিয়েই কি কোনও পরিকল্পনা হয়েছে? এমনিতে সরকারি কর্মীর সঠিক সংখ্যা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। গত দশকে রাজ্যে সরকারের অনুমোদিত পদ ছিল ৪ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৯০। প্রশাসনিক কর্মিবর্গ দপ্তরের হিসেব বলছে, বছরে গড়ে ৫ শতাংশ কর্মী অবসর নেন।
সেইমতো ২০২৩–এর ৩১ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের কর্মরত কর্মী সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৫৬। অর্থাৎ সরকারি হিসেবেই এই মুহূর্তে রাজ্য শূন্যপদের সংখ্যা ২ লক্ষ ৬৪ হাজারের বেশি। আবার কোনও পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকলে তা সরকারি খাতায় অবলুপ্ত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
এই শূন্যস্থান পূরণ করে সরকারের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাচ্ছেন কিছু অবসরপ্রাপ্ত কর্মী, যাঁদের পুনর্নিয়োগ হয়েছে। আর মন্ত্রীদের পছন্দের কিছু অনুগামী, যাঁরা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করছেন। কারণ গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে সরকারি ক্ষেত্রে বড় নিয়োগ হয়নি। বিক্ষিপ্ত ভাবে স্বল্প সংখ্যক নিয়োগ হয়েছে। ফলে সচিবালয় থেকে জেলা অফিস— সর্বত্রই সরকারি দপ্তরে কর্মীসঙ্কট চলছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীরা মানুষকে পরিষেবা দেন। তাই রাজ্যের প্রশাসনিক কর্মিবর্গ দপ্তরের নীতি হলো, জনসংখ্যার নিরিখে সরকারের অনুমোদিত পদের সংখ্যা বাড়ানো। যা গত দু’দশক ধরে হয়নি। ১৯৮০–তে রাজ্যে প্রতি এক লক্ষ মানুষ পিছু ছিলেন ৬৭৪ জন সরকারি কর্মী। আর এই মুহূর্তে রাজ্যে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যা পিছু অনুমদিত পদ রয়েছে ২৩১টি।