চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) তৈরি আজও হল না। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে রয়েছে প্রকল্পটি। স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি দল কোচবিহারে এসে সার্ভেও করে গিয়েছিল। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঠিক করা ক্যাম্পাসের সেই জমি পছন্দ হয়নি স্বাস্থ্য দপ্তরে কর্তাদের।
মেডিক্যালের এমআরআই বিল্ডিং এবং পিপি ইউনিটের পাশেই ছিল সেই নির্ধারিত জায়গা। দ্বিতীয় জমি হিসাবে হাসপাতালের বহির্বিভাগ লাগোয়া যে জমিটি বেছেছিল কর্তৃপক্ষ, সেটিতেও পড়ল বাধা। কারণ তার ফলে ভাঙা পড়ত একটি হেরিটেজ বিল্ডিং। তাই নতুন করে তৃতীয় বার জমি বেছে সিসিইউ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু তার পরে এখনও পর্যন্ত মেলেনি রাজ্যের সবুজ সংকেত।
এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাক্তার নির্মলকুমার মণ্ডলের বক্তব্য, ‘হাসপাতালের সামনের যে জায়গাটিতে ইউনিটটি হওয়ার কথা ছিল, সেই জমি নিয়ে সমস্যা থাকায় রাজ্য জমি বদলের নির্দেশ দেয়। তাই বিবেকানন্দ স্ট্রিটে মেডিকেল কলেজেরই একটি জমিতে ব্লকটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার খসড়া প্রস্তাব রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও অনুমোদন আসেনি।’ রাজ্যের অনুমতি পেলেই কাজটি শুরু হবে বলে জানালেন তিনি।
চারতলা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটটির জন্য বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল প্রায় ১৬ কোটি টাকা। কিন্তু তার জন্য যে নকশা তৈরি করা হয়েছিল তাতে প্রথমে ত্রুটি থাকায় কাজটি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। পরে জমির সমস্যায় আটকে যায় প্রকল্প। কারণ, সেখানে হাসপাতালের পানীয় জল সরবরাহের বোরিং সংযোগ রয়েছে, যা আগে কারও নজরে আসেনি। জানা গিয়েছে, সিসিইউ ইউনিট গড়তে ৫০ মিটার লম্বা ও ২০ মিটার চওড়া জমি প্রয়োজন। গত বছর জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রকল্পটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু তার পর একটুও কাজ এগোওনি। সব মিলিয়ে ৫০ বেডের এই ইউনিটে অত্যাধুনিক সমস্ত ব্যবস্থা থাকার কথা ছিল। বর্তমানে সবকিছুই প্রশ্নের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। এমজেএনের এমএসভিপি সৌরদীপ রায় জানিয়েছেন, আগের এমএসভিপি থাকার সময় এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে সেটির অনুমোদন এখনও পাওয়া যায়নি।’ এখন কী পরিস্থিতিতে, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
কোচবিহার মেডিক্যালে বর্তমানে ৭৯২টি বেড রয়েছে । তারমধ্যে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট ২৪, এইচডিইউ–তে ২০টি, ট্রমা কেয়ারে ২০টি এবং এসএইচসিইউ–তে ২৮টি বেড রয়েছে। জানা গিয়েছে, নতুন সিসিইউ ব্লকটি তৈরি হলে এই মেডিক্যাল লেভেল থ্রি থেকে লেভেল ওয়ানে উত্তীর্ণ হতো। বিশেষ করে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এবং গুরুতর অসুস্থেরা বাড়তি সুবিধা পেতেন। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরিষেবা মিলত।