এই সময়, বর্ধমান: চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার দিন বয়সি এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অথচ হাসপাতালের তরফে মৃতের পরিবারকে দেওয়া নথিপত্রে লেখা হয় মারা গিয়েছে শিশুপুত্র। সোমবার এই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় বর্ধমান মেডিক্যালে।
হাসপাতালের বিরুদ্ধে মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি জানানো হলেও প্রথম দিকে অভিযোগ শুনতে রাজি হচ্ছিলেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ব্যাপারটি বুঝতে পেরে হাসপাতালের তরফে বড়সড় এই ভুল শুধরে নেওয়া হয়। ভুল কাগজপত্র তৈরি করার জন্য শো–কজ় করা হয় এক কর্মীকে। কিন্তু তার পরেও গাফিলতির প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, গত ২ তারিখ বর্ধমানের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এক শিশুকন্যার জন্ম দেন মাধবডিহি থানা এলাকার আখিনা গ্রামের বাসিন্দা সুমিত্রা কৈবর্ত্য। কিন্তু জন্মের পর থেকেই শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। নার্সিংহোমের চিকিৎসকের পরামর্শে গত ৩ জানুয়ারি বর্ধমান মেডিক্যালে শিশুটিকে ভর্তি করান পরিবারের লোকজন। রবিবার রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
সুমিতার বাবা সুপ্রভাত মণ্ডল বলেন, ‘সোমবার সকালে দেহ দেওয়ার আগে যে কাগজপত্র হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয় সেখানে মেল বেবি লেখা ছিল। আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগে বারবার জানাই, আমার নাতনি হয়েছে। কিন্তু সেখানে কেউ কিছু শুনতে চাইছিলেন না।’
সুমিত্রার মামা প্রসেনজিৎ পাকড়ের অভিযোগ, ‘শিশুকন্যার পরিবর্তে শিশুপুত্রের দেহ দেওয়া হবে ভেবে আমরা দেহ নিতে অস্বীকার করি। তখন জোর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয় আমাদের। এখন সন্দেহ হচ্ছে, বাচ্চাটা সঠিক চিকিৎসা আদৌ পেয়েছিল তো?’
পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, এটা একটি টেকনিক্যাল ভুল। পরিবারের হাতে শিশুর দেহ তুলে দেওয়ার আগে দ্রুত কাগজপত্র ঠিক করতে গিয়ে ভুলটা হয়।
হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, ‘এইসব কাগজপত্র দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতির লোকেরা। তাঁদের থেকেই ভুল হয়েছে। আমরা জানতে পেরে দ্রুত ভুল শুধরে নিয়েছি। ভুল কাগজপত্র তৈরির জন্য একজন কর্মীকে শো-কজ় করা হয়েছে। আমাদের কাছে ওই মৃত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবুও আমরা বিভাগীয় তদন্ত করছি।’