• লোক নিয়োগ করে চলছিল পাসপোর্ট চক্র, বাংলাদেশি পিছু মুনাফা ছিল ২ - ২.৫ লক্ষ
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • পাসপোর্ট জালিয়াতিতে তদন্তকারীদের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, রীতিমতো মোটা টাকা দিয়ে কর্মী নিয়োগ করে চলছিল জালিয়াতি চক্র। বাংলাদেশি খদ্দের জোগাড় করতে নিয়োগ করা হয়েছিল এজেন্ট। এতটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশিদের ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়ার চক্র চলছিল দেখে অবাক গোয়েন্দারাও।

    তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, পাসপোর্ট চক্রের কিংপিন হল সমরেশ বিশ্বাস ও মনোজ গুপ্ত। এরাই চালাত গোটা চক্র। লাভের টাকাও ভাগ হত এদের মধ্যে। রীতিমতো কর্মী নিয়োগ করে পাসপোর্ট তৈরির কারবার ফেঁদে বসেছিল এই ২ জন।

    তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, পাসপোর্ট চক্রে খদ্দের জোগাড় করার জন্য এজেন্ট নিয়োগ করেছিল মনোজ ও সমরেশ। বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে তাদের এজেন্টরা। তাদেরই একজন উত্তর ২৪ পরগনার ছোট জাগুলিয়া থেকে গ্রেফতার হওয়া মোক্তার। ২.৫ - ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট তৈরি করে দিত চক্রের পান্ডারা। এর মধ্যে ৫০ হাজার টাকা খরচ হত পাসপোর্ট তৈরি করতে। বাকি পুরোটাই ছিল তাদের লাভ।

    তদন্তে উঠে এসেছে, যে এজেন্টরা বাংলাদেশি খদ্দের জোগাড় করে এনে দিত তাদের দেওয়া হত ৩ - ৫ হাজার টাকা। পঞ্চায়েত থেকে বার্থ সার্টিফিকেট ও অন্যান্য নথি তৈরি করতে খরচ হত ২ - ৫ হাজার টাকা মতো। সামান্য খরচে তৈরি হয়ে যেত আধার কার্ডও। পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আবদুল হাইয়ের মতো পুলিশ আধিকারিককে পাসপোর্টপিছু দেওয়া হত ১০ - ১২ হাজার টাকা। আর চক্রে যুক্ত ডাকঘরের পিওনরা পাসপোর্ট পিছু পেতেন ১ - ৩ হাজার টাকা। এই টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাসপোর্ট পৌঁছে না দিয়ে চক্রের পান্ডাদের হাতে পাসপোর্ট তুলে দিত তারা।

    এপর্যন্ত তাও ঠিক ছিল, তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কার কোন নথি লাগবে আর সেই নথি কী ভাবে বানাতে হবে সেসব নিখুঁতভাবে করতে একজন কর্মী নিয়োগ করেছিল মনোজরা। সেই কর্মীকে মাসে ২৫ হাজার টাকা বেতন দিত তারা। কর্পোরেট কায়দায় বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার চক্র রাজ্যে দিনের পর দিন চললেও পুলিশের কাছে কেন তার খবর ছিল না সেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, রাজ্যের শাসকদলের মদতেই চলছিল এই চক্র। সম্প্রতি বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির জেরে ধরপাকড়ে নামতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)