যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধের অপেক্ষায় বনকর্মীরা, মৈপীঠে খাঁচা পেতে হবে হৈ হট্টগোল ...
আজকাল | ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
বিভাস ভট্টাচার্য: ঘন ঘন সূর্যর দিকে তাকাচ্ছিলেন বনকর্মীরা। অপেক্ষায় ছিলেন সন্ধে নামার। তারপরেই শুরু হবে কাজ। কারণ, সারাদিন বাঘ গা এলিয়ে বসে থাকলেও সন্ধের পর গা ঝাড়া দিয়ে শুরু করে চলাফেরা। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য কুলতলির মৈপীঠেও বনকর্মীরা শুরু করেছেন প্রস্তুতি। সুন্দরবনের ‘রাজা’কে তার এলাকায় ফেরানোর।
সুন্দরবনের কুলতলির মৈপীঠে গত দু’দিন ধরে বাঘের আতঙ্ক তাড়া করছে এলাকাবাসীকে। খবর পেয়ে বন দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকরা এসে সুন্দরবনের একেবারে লাগোয়া ওই এলাকায় বাঘের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হন। এরপরেই জঙ্গলের ধার ঘেঁষে গ্রামের চারপাশে জাল লাগিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। সেইসঙ্গে মাইকিং করে গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক করার কাজ করে স্থানীয় পুলিশ।
এর পাশাপাশি শুরু হয় বাঘটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর। প্রথমে মৈপীঠের জঙ্গলে ঠিক কোন জায়গায় বাঘটি রয়েছে সেই জায়গাটির অবস্থান চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়। চিহ্নিত করা হয় জঙ্গলে ৫০০ মিটার একটি এলাকা। এরপরেই মঙ্গলবার দুপুরে ওই জায়গায় পটকা ফাটানোর সঙ্গে ব্যাপক হৈ হট্টগোল করা হয়। উদ্দেশ্য, বাঘটিকে ভয় দেখিয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠানো।
রাজ্য বন বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, এদিন চেঁচামেচি এবং পটকার আওয়াজে বাঘটি জায়গা পরিবর্তন করে। এলাকাটা যেহেতু একেবারেই নদীর ধার ঘেঁষে এবং দুপুরে জোয়ারের জন্য নদীতে জল বেশি থাকায় বাঘ কিছুটা গিয়েও নদী পর্যন্ত আর যায়নি।
ওই আধিকারিক জানান, বাঘের সবথেকে বেশি চলাফেরা শুরু হয় সন্ধে নামার পর। আর এই সময়টাতে নদীতে ভাঁটাও আছে। সেজন্য মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই চেষ্টা করা হবে হৈ হট্টগোল করে আর পটকা ফাটিয়ে যাতে তাকে জঙ্গলের দিকে ফেরত পাঠানো যায়। সেই প্রস্তুতিই নিয়ে রেখেছেন বনকর্মীরা। অন্ধকার একটু ঘন হলেই শুরু হবে এই প্রক্রিয়া।
এর পাশাপাশি জঙ্গলে ছাগলের টোপ দিয়ে একটি খাঁচাও পেতে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান। তাঁর কথায়, বাঘটি যদি ক্ষুধার্ত থাকে তবে ছাগলের টানে সে খাঁচার দিকে যেতে পারে। সেজন্যই খাঁচা পাতা। ফলে একদিকে যেমন চেষ্টা করা হবে তাকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানো তেমনি চেষ্টা হবে খাঁচাবন্দি করা।