গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন সীমান্তের ওপার থেকে যেন কোনও সমস্যা না হয় : মমতা
আজ তক | ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
গঙ্গাসাগর মেলা ঘিরে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সর্বাত্মক নজরদারির নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের কথা মাথায় রেখে সীমান্ত সুরক্ষা আরও জোরদার করার পাশাপাশি স্থল, বায়ু ও জলপথে নজরদারি বাড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার এক সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে গঙ্গাসাগর মেলায় কোনও ঝামেলা না হয়। স্থল, বায়ু এবং জলপথে কড়া নজরদারি চালাতে হবে। আমি নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষীদের বিষয়টি জানিয়েছি। আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে সীমান্তের ওপার থেকে কোনও সমস্যা যেন সৃষ্টি না হয়।”
পুলিশ বাহিনীর বিশেষ মোতায়েন
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলায় কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিকদের নেতৃত্বে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হবে। সাগর দ্বীপের পাশাপাশি কচুবেড়িয়া এবং ৮ নম্বর লটের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতেও কঠোর নজরদারি থাকবে।
তিনি বলেন, “মোট ১০ জন মন্ত্রী দায়িত্বে থাকবেন। এর মধ্যে ৪-৫ জন থাকবেন সাগর দ্বীপে এবং বাকিরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নজরদারি করবেন। আইজি এবং ডিআইজি পর্যায়ের অফিসারদেরও মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের মধ্যে ভালো সমন্বয়ের মাধ্যমে নজরদারি বজায় রাখা হবে।”
গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতির দাবি
কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কুম্ভ মেলার পুরো খরচ কেন্দ্র বহন করে, কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলার জন্য এক টাকাও দেয় না। আমরা বহুবার কেন্দ্রের কাছে গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। কোনও সাড়া না মেলায় আমরা নিজস্ব উদ্যোগে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা সাগর দ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।”
পরিবেশবান্ধব গঙ্গাসাগর মেলার উদ্যোগ
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তাঁর সরকার গঙ্গাসাগর মেলাকে পরিবেশবান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। মেলার প্রস্তুতি তদারকি করতে দুই দিনের সফরে সাগর দ্বীপে এসে তিনি ৩০টি সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং ১৯টি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
লক্ষাধিক তীর্থযাত্রীর সমাগম
মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতি বছর গঙ্গা ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গমস্থলে পবিত্র স্নান করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু তীর্থযাত্রী সাগর দ্বীপে আসেন। বিদেশ থেকেও বহু ভক্ত আসেন এই মেলায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো ভক্তদের জন্য সব ধরনের সুরক্ষা ও পরিষেবা নিশ্চিত করা।”