• জন্মজয়ন্তীর ছুটি বাতিল, উত্তাল চিত্তরঞ্জন
    বর্তমান | ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: নেতাজির জয়ন্তীতে ছুটি দিচ্ছে না রেল। যারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার তীব্র আন্দোলনে উত্তাল হল চিত্তরঞ্জন। নেতাজির জন্মদিনে ছুটি দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভের জেরে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে যায় রেলশহর। একদিকে শ্রমিকরা শহরের ভিতরে আন্দোলন করেন। অন্যদিকে, বাইরের আন্দোলনকারীরা শহরের ভিতর ঢুকে পড়ায় তাঁদের বের করে দেয় আরপিএফ। যা নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। 


    দেশের বীর সন্তানের জন্মদিনে ছুটির দাবিতে শহরের বাইরেও আন্দোলন চলছিল। সেই সময় আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। আইএনটিইউসির পক্ষ থেকে কারখানার ভিতরে প্রশাসনিক অফিসে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন, যদি নেতাজি জয়ন্তীতে ছুটি না দেওয়া হয় তাহলে ২২ জানুয়ারি থেকে লাগাতার ধর্না শুরু হবে। নেতাজি জয়ন্তীতে ছুটি দেওয়ার দাবিতে সরব হয় সিটুও। 


    সিএলডব্লুর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক উত্তমকুমার মাইতি বলেন, রেস্ট্রিকটেড হলিডের তালিকায় নেতাজি জয়ন্তী রয়েছে। একজন রেলকর্মী সারা বছরে এমন দু’টি ছুটি নিতে পারেন। যেসব কর্মী নেতাজি জয়ন্তীতে ছুটি নিতে চাই঩বেন, তাঁরা নেবেন। আর ছুটির তালিকা তৈরি করা হয় শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেই। 


    যদিও রেলের দাবি উড়িয়ে সিএলডব্লু লেবার ইউনিয়ানের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত বলেন, আমরা কোনদিনই নেতাজির ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত মানিনি। এবারও আমরা ছুটি বাতিল করার প্রতিবাদ জানিয়েছি।


    সিআরএমসি-এনএফআইআরের নেতা নেপাল চক্রবর্তী বলেন, আমরা এদিন কারখানার ভিতর তীব্র বিক্ষোভ দেখিয়েছি। নেতাজি জয়ন্তীতে রেলকে ছুটি দিতে হবে। না হলে আমরা ধর্নায় বসব। 


    কয়েক বছর ধরেই নেতাজির জন্ম‌জয়ন্তীতে ছুটি তুলে দিয়েছে ভারতীয় রেল। এবারও যে ছুটির তালিকায় পূর্ব রেল ও সিএলডব্লু প্রকাশ করেছে তাতে নেতাজি জয়ন্তীতে ছুটি নেই। যা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে শিল্পাঞ্চলে। শ্রমিক সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই এনিয়ে কারখানার ভিতরে আন্দোলন শুরু করেছে। চিত্তরঞ্জন শহর ও শিল্পাঞ্চলের দেশপ্রেমিক মানুষ এই নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়। বাংলা পক্ষের ডাকে এদিন চিত্তরঞ্জন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। আগাম রেলের কাছে অনুমতি নেওয়া হয় যাতে জিএম অফিসে গিয়ে প্রতিবাদপত্র দেওয়া যায়। এদিন সকালে শ্রমিকদের একাংশ দেশের মহান  নেতার জন্মদিনের দিন ছুটির দাবি নিয়ে এগোতে গেলে তাঁদের পথ আটকায় আরপিএফ। তাঁদের শহরের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। এরপরই সকাল ১১টা থেকে শহর ঢোকার মূল রাস্তা ৩ নম্বর গেট অবরোধ করে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। আরপিএফ, পুলিস ও রেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পরেও আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন। অবশেষে রেল এনিয়ে কথা বলতে সম্মত হয়। আন্দোলনকারীদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিরা গিয়ে নেতাজির জন্মদিনে ছুটি দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি নেতাজির মূর্তি স্থাপনেরও দাবি জানানো হয় রেলের কাছে, বলে জানান বাংলা পক্ষের জেলা সম্পাদক অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায়।অন্যদিকে এদিন শ্রমিকরা ছুটির দাবিতে কারখানার ভিতরে আন্দোলন করে। ঘরে বাইরে আন্দোলনের চাপ প্রথমবার পেল সিএলডব্লু কর্তৃপক্ষ। এখন দেখার নেতাজি নিয়ে রেলের মনোভাবের পরিবর্তন হয় কি না।  
  • Link to this news (বর্তমান)