সংবাদদাতা, সিউড়ি: এক মাসে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ৫১২কোটি টাকা ঋণ দিয়ে রাজ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে বীরভূম জেলা। চলতি আর্থিক বছরে এই জেলায় প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি ঋণদানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এনিয়ে জেলায় প্রায় ১৪০০কোটি টাকার বেশি ঋণ অনুমোদন দেওয়া হল।
ডিআরডিসি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে শুধু ডিসেম্বর মাসেই জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ৫১২কোটি টাকার ঋণদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ টাকাই পেয়ে গিয়েছেন গোষ্ঠীর মহিলারা। জেলার ১২হাজার ৮১৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে এই ঋণ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় দেড় লক্ষ মহিলা বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়েছেন। এবছর এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ১৯০০ কোটি টাকা ঋণদানের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার অনেকটা পূরণ হয়েছে।
গত আর্থিক বছরে এই ঋণদানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬৫০ কোটি টাকা। সেই লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। এবছরও নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা। শুধু ডিসেম্বর মাসে ৫১২কোটি টাকা ঋণের অনুমোদন দিয়ে গোটা রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বীরভূম জেলা। ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। এই জেলা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। তারপরই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। ওই জেলা ৩২০কোটি টাকা ঋণের অনুমোদন দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
এই ঋণ নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে জেলার মহিলারা বিভিন্ন হাতের কাজ, টেলারিং, বিউটি পার্লার, বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত, মাটির জিনিস তৈরি থেকে মাশরুম চাষ করছেন। ঋণ সঠিক সময়ে পরিশোধও করছেন মহিলারা। ফলে এই ধরনের ঋণের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে মহিলাদের। পাশাপাশি এই ঋণ নিয়ে হাতের কাজের সামগ্রী বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন তাঁরা। জেলার বোলপুর, পাড়ুই, সাঁইথিয়া, ইলামবাজার, ময়ূরেশ্বর-১ ও ২ ব্লকের কিছু এলাকায় সরকারি ঋণের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে। লাভপুরের জামনা পঞ্চায়েতের হাটকালুহা গ্রামের বাসিন্দা আরজিনা বিবি বলেন, লোন নিয়ে কাঁথাস্টিচের ব্যবসা করছি। বিভিন্ন মেলা ও পরিচিতদের বিক্রি করে ভলো রোজগার হচ্ছে। এই লোন আমাদের খুব কাজে লাগছে।
জেলা ডিআরডিসি দপ্তরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আজমল হোসেন বলেন, বীরভূম জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণদানের ক্ষেত্রে ডিসেম্বর মাসে আমাদের জেলা প্রথম স্থানে পৌঁছেছে। এক মাসে প্রায় ৫১২ কোটি টাকার ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জেলার মহিলারা এই ঋণ নিয়ে দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছেন। নানা ধরনের হাতের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোজগারের মুখ দেখছেন তাঁরা। তাই এই ঋণের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।