নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: আলুচাষের জমির বিমা করার সময়সীমা বাড়াল কৃষিদপ্তর। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চাষিরা বিমা করতে পারবেন। বোরো চষিরাও ওই সময় পর্যন্ত বিমা করাতে পারবেন। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে আলুজমির বিমা করার সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে অধিকাংশ চাষি বিমা করাননি। এবছর আলুচাষ অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে। ওই সময় চাষিরা মাঠের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ক্যাম্পে গিয়ে বিমা করার সময় তাঁরা পাননি। সেই কারণে চাষিদের সুবিধার জন্যই বিমার সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ডিডিএ নকুল মাইতি বলেন, বেশি সংখ্যক চাষিদের বিমার আওতায় আনার টার্গেট রয়েছে প্রশাসনের।
কৃষিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জন্য গত বছর আলুচাষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চাষিদের দু’বার আলুবীজ বপন করতে হয়েছিল। বিমা থাকায় চাষিরা বড়সড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। সেই কারণে এবারও যাতে বেশি সংখ্যক চাষি বিমা করতে পারেন তারজন্য পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও ক্যাম্প করা হবে। চাষিদের দাবি, বিমা নিয়ে কৃষিদপ্তরের আরও বেশি করে প্রচার চালানো দরকার। অনেকে বিমার সুবিধার কথা জানতে পারছেন না। আবার অনেকে কবে কোথায় বিমা করা হচ্ছে সেটাও জানতে পারছেন না। যদিও কৃষিদপ্তর এই অভিযোগ মানতে চায়নি। আধিকারিকদের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় ট্যাবলো ঘুরছে। এছাড়া জেলাজুড়ে হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। চাষি সুকুমার বিট বলেন, কবে থেকে বিমা করানো শুরু হয়েছিল তা জানতে পারিনি। তবে বিমার সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হওয়ায় চাষিদের সুবিধা হবে। এতদিন চাষিরা মাঠের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এবার তাঁদের বিমা করতে সমস্যা হবে না। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, চাষিদের বিমা করতে যাতে সমস্যা না হয়, তারজন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ক্যাম্প করা হবে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়। এই জেলাগুলিতে বিশেষ ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চাষিরা বলেন, এবছর আলুর দাম বেশি থাকলেও তাঁরা তেমন সুবিধা পাননি। মাঠে কম দামে আলু বিক্রি করতে হয়েছিল। কিন্তু হিমঘরে আলু রেখে ব্যবসায়ীদের একাংশ ফায়দা তুলেছে। রাজ্য সরকার ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেটা উপেক্ষা করে ভিনরাজ্যে আলু পাঠিয়ে অনেকে ব্যবসায়ী ফায়দা তুলেছে। তবে আগামী দিনে চাষিরা যাতে সমস্যায় না পড়েন, তারজন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, বিমা হল চাষিদের কাছে রক্ষাকবচ। সেটা করা থাকলে দুর্যোগ হলেও চাষিদের পথে বসতে হবে না।