• ৭ লক্ষ টাকায় শিশু কিনে লেকটাউন থেকে সিআইডির জালে দম্পতি
    বর্তমান | ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: টাকার বিনিময়ে এক শিশুকে কিনে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার দম্পতি। বিজয় ও নেহা সান্তালিয়া নামে ওই দম্পতিকে যশোর রোড এলাকার এক বহুতল থেকে সোমবার রাতে ধরা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’মাসের একটি শিশু কন্যা সন্তান। সাত লক্ষ টাকায় কেনা হয়েছিল বাচ্চাটি। বিহারের কোথা থেকে এই বাচ্চাটি আনা হয়েছিল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত দুজনকে মঙ্গলবার হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হলে তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।


    শিশু বিক্রি ও পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০২৪’এর নভেম্বরে শালিমার স্টেশন থেকে সিআইডির হাতে ধরা পড়ে  মানিক হালদার ও তার স্ত্রী মুকুল সরকার। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় মাত্র দু’দিন বয়সের একটি কন্যা সন্তান। জেরা করে জানা যায়, বিহার থেকে বাচ্চাটিকে আনা হচ্ছে। নিঃসন্তান দম্পতিদের বিক্রি করা হচ্ছে পাঁচ থেকে পনেরো লক্ষ টাকায়। পুত্র সন্তান হলে তার রেট বেশি। তাদের জেরা করে ধরা পড়ে এজেন্ট জোৎস্না। 


    জোৎস্নাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, নিঃসন্তান দম্পতিকে খুঁজে বের ধরার জন্য তার একটি সিন্ডিকেট রয়েছে।  মিডলম্যানদের মাধ্যমে খবর আসছে কার বাচ্চার প্রয়োজন। সেইমতো সে যোগাযোগ করছে মানিকের সঙ্গে।  বিহারের এক মহিলার কাছ থেকে বাচ্চা নিয়ে আসছে অভিযুক্ত মানিক। তদন্তে জানা যায়, ওই দম্পতির পরিবারে যাতায়াত থাকা এক ব্যক্তি জোৎস্নার সিন্ডিকেটে মিডলম্যান হিসেবে কাজ করছে। তাকে সান্থালিয়া পরিবার জানায়, তাঁদের সাত বছরের ছেলে রয়েছে। একটা মেয়ে দরকার।  কিন্তু নেহার শারীরিক সমস্যা হওয়ায় নতুন করে সন্তানধারণ সম্ভব নয়। সেই কারণে তাঁরা সন্তান দত্তক নিতে চান। ওই মিডলম্যান যোগাযোগ করে জোৎস্নার সঙ্গে। অভিযুক্ত মহিলা সিন্ডিকেটের সদস্যকে বলে বাচ্চা পাওয়া যাবে, এরজন্য সাত লক্ষ টাকা দিতে হবে। ওই দম্পতি রাজি হওয়ার পর জোৎস্না যোগাযোগ করে মানিকের সঙ্গে। অভিযুক্ত মহিলা সিআইডিকে জানিয়েছে, বিহার থেকে বাচ্চা নিয়ে এসে মানিক তাকে দিয়েছে। বিনিময়ে তিন-চার লক্ষ টাকা নিয়েছে। এরপর সে মিডলম্যানকে মাস দুয়েক আগে এক শিশু হ্যান্ডওভার করে। মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে বাচ্চাটি পান সান্থালিয়া দম্পতি। নগদে তাঁরা টাকা মিটিয়েছিলেন। এরপরই সিআইডির তদন্তকারীরা ওই বহুতলে হানা দিয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করেন। বেআইনিভাবে শিশু কেনা ও দত্তক নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় দম্পতিকে। বিহারের যে মহিলার মাধ্যমে শিশু আসছে তার নাম পেয়েছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, সে বিভিন্ন জায়গা থেকে শিশু জোগাড় করে পাঠাচ্ছে মানিককে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পরিচয় হয়েছিল দুজনের। জোৎস্না ও মানিক কতজন শিশু বিক্রি করেছে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)