• খুচরো নেই, নগদের হাহাকার, বাণিজ্য সীমান্তে নাকাল ব্যবসায়ীরা
    এই সময় | ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: ডিজিটাল লেনদেনের চক্করে পড়ে নগদ হাওয়া হয়ে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বাজার থেকে। খোলা বাজার তো বটেই, ব্যাঙ্কেও ক্রমশ কমছে দশ টাকা, কুড়ি টাকা, পঞ্চাশ টাকা কিংবা একশো টাকার নোট। এমনকী, নগদের সন্ধানে এটিএমে গিয়ে দাঁড়ালেও কপালে কেবলই পাঁচশো টাকার নোট। কেন্দ্রীয় সরকার জিডিটাল লেনদেনের দিকে নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন ক্রেতা, বিক্রেতা, উভয়পক্ষকেই। সেই ডিজিটাল লেনদেন যে সহজ কথা নয় সেটা এখন সাইবার থানাতে গিয়েও টের পাওয়া যায়।

    না-বুঝে ওটিপি প্রতারকদের জানিয়ে দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়ানোর ঘটনা রোজই সামনে আসছে। প্রতারকদের পাল্লায় পড়ে টাকা খোয়ানোর ভূরি ভূরি অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্রেতা কিংবা বিক্রেতাই ডিজিটাল লেনদেনে এখনও অভ্যস্তও হয়ে উঠতে পারেননি। উদ্বিগ্ন উত্তরবঙ্গের অন্যতম ব্যবসায়ী সংগঠন ফেডারেশন অফ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গল (ফোসিন)। তাদের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে দ্রুত বাজারে নগদ বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনটির আর্জি, ভুটান সীমান্তের জয়গাঁ এবং নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভুটানি ও নেপালি নোট বিনিময়ের ব্যবস্থা করা হোক।

    ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সর্বত্র নগদের হাহাকার চলছে। খুচরো নোট নেই। এমনকী, একশো টাকার নোটও বাজারে কার্যত অমিল। ডিজিটালে মানুষ এখনও অভ্যস্ত হতে পারেননি। খুচরো সঙ্কট মেটাতে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে সেই কারণেই বাজারে নগদ বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে।’

    ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময়ে জয়গাঁ এবং পানিট্যাঙ্কিতে দু’টি রাষ্ট্রয়ত্ব ব্যাঙ্ককে ভুটানি ও নেপালি নোট লেনদেনের অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। পরে সেই অনুমোদন তুলে নেওয়া হয়। অথচ ভারত-ভুটান এবং ভারত-নেপাল বাণিজ্য সীমান্ত এলাকায় অবাধে চলছে। সেই নোট বদল করতে গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। জয়গাঁর পাশেই ভুটানের ফুন্টশোলিংয়ে ভুটানি ব্যাঙ্কে ভারতীয় নোট সহজেই বদল করা যায়।

    ভুটানি নোট জমা দিয়ে ভারতীয় নোট সংগ্রহ করা যায়। পানিট্যাঙ্কি লাগোয়া নেপালের কাঁকরভিটাতে সেই ব্যবস্থাও নেই। নোট বদল করতে স্থানীয় দালালদের ধরতে হচ্ছে। সেখানে নোট বিনিময়ের মূল্য সঠিক না-হওয়ায় আখেরে ব্যবসায়ীদের ঠকতে হচ্ছে। ফোসিনের সম্পাদক বলেন, ‘পানিট্যাঙ্কি এবং জয়গাঁয় দুটি রাষ্ট্রয়ত্ব ব্যাঙ্কে নোট বিনিময়ের অনুমতি দেওয়া দরকার। না-হলে ব্যবসায়ীদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’

    প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গেও বাণিজ্য হচ্ছে শিলিগুড়ি থেকে। সেখানে কিন্তু এই সমস্যা নেই। কেননা, বাংলাদেশ সরকারি শিলিগুড়িতেই নিজেদের দেশের একটি ব্যাঙ্কের শাখার খুলে রেখেছেন। অনায়াসে সেখানে গিয়ে নোট বিনিময় করা সম্ভব হচ্ছে।

  • Link to this news (এই সময়)