• ওটিপি হাতিয়েই আবাসের টাকা গায়েব! সতর্ক প্রশাসন
    এই সময় | ০৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • সুগত বন্দ্যোপাধ্যায়

    টাকা বিলির সিস্টেমে গলদ নয়, ওটিপি হাতিয়েই আবাস–উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাপিশ করেছে প্রতারকরা!

    উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর–১ ব্লকের পাঞ্জিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকজন আবাস উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েবের ঘটনায় তদন্তে নেমে এমনটাই সন্দেহ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের। সোমবার এই খবর বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেছিল ‘এই সময়’।

    এই ঘটনা সামনে আসতেই সবক’টি জেলা প্রশাসনকে আবাসের টাকা বিলির ক্ষেত্রে জালিয়াতি নিয়ে সচেতন করা হলো নবান্নের তরফে। জেলাশাসকদের উদ্দেশে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব নির্দেশ দিয়েছেন, ওটিপি জালিয়াতি নিয়ে আবাস–উপভোক্তাদের বারবার সচেতন করতে হবে, যাতে কেউ ফোন করে ওটিপি বা আধার সংক্রান্ত তথ্য চাইলে তাঁরা যেন না–দেন।

    এই ধরনের কোনও সমস্যা হলে উপভোক্তাদের সরাসরি জেলাশাসক বা বিডিও–র কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, টাকা হাতানোর ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় এক সাইবার কাফের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার মঙ্গলবার বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম থেকেই উপভোক্তাদের টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। জেলা প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছি।’

    পাঞ্জিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকজন আবাস–উপভোক্তার অভিযোগ, গত কয়েক দিনে তাঁরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন, ধাপে ধাপে টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারকরা। এই খবর সামনে আসার পরে জেলা পুলিশের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা জেনেছেন, ওই উপভোক্তারা মোবাইলে আসা ওটিপি প্রতারকের কাছে শেয়ার করার পরেই টাকা গায়েব হয়েছে।

    কিন্তু ওই আবাস–উপভোক্তাদের তালিকা কী ভাবে গেল প্রতারকদের কাছে? ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া গ্যাং ঠিক এ ভাবেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের টাকা হাতিয়ে নিত এক সময়ে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রতারকরা র‍্যান্ডমলি গ্রাহকদের ফোন করত। এখানে অবশ্য গোয়ালপোখরের ওই এলাকায় যে সব বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে আবাসের প্রথম পর্বের ৬০ হাজার টাকা ঢুকেছে, তাদের বেছে বেছে ফোন করেছে প্রতারকরা।

    পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, কোনও ব্লক বা পঞ্চায়েত এলাকায় কারা আবাসের টাকা পাচ্ছেন, তাঁদের তালিকা ওয়েবসাইটে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত অফিসেও তালিকা টাঙানো থাকছে। সেখান থেকেই কোনও ভাবে তালিকা জোগাড় করে প্রতারকরা আবাস–উপভোক্তাদের ফোন করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস, ওটিপি ইত্যাদি হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণার কারবার চালাচ্ছে। সেজন্যই সব জেলাশাসককে সতর্ক করা হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)