এই সময়: উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মর্গে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ লাশ নিয়ে মিশ্র ছবি। কোথাও সমস্যার সদ্য সমাধান হয়েছে। তাতে দুর্গন্ধের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু, আবার আগের পরিস্থিতি ফিরে আসবে না তো? এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁদের মনে।
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের কাছের বাসিন্দারা মৃতদেহের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠতেন সপ্তাহ দু'-তিনেক আগেও। হাসপাতাল পাড়া, সেনপাড়ার মানুষজন গরম পড়লে ঘরের দরজা–জানলা বন্ধ করে রাখতেন। পচা গন্ধে ঘরে থাকাই ছিল দায়। সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে সদ্য। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল ছাড়াও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পুলিশ মর্গ রয়েছে।
মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রাজ্যের বরাদ্দ ৮০ লক্ষ টাকায় জেলা হাসপাতালে নতুন করে মর্গ তৈরি করা হয় ২০১৮ সালে। যেখানে ৩২টি মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা ছিল। তাতেও কাজ না হওয়ায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আরও একটি মর্গ তৈরি করা হয় বছর তিনেক আগে। ফ্রিজ়ারের সংখ্যা বাড়লেও দাবিদারহীন দেহের সংখ্যা এতটাই বেশি যে মাঝেমধ্যে জায়গা কম পড়ে। এসি বিকল হলে সমস্যা আরও বাড়ে।
মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি কল্যাণ খাঁ বলেন, ‘একটা সময় অনেক দেহ জমে গিয়েছিল। তার উপর যন্ত্র বিকল থাকায় সমস্যা বেড়েছিল। পূর্ত দপ্তরকে বলে শীতাতপ যন্ত্র বসানো ছাড়াও দাবিদারহীন বহু দেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’ সেনপাড়ার বাসিন্দা কানাই রায় বলেন, ‘ভবিষ্যতে দেহের সংখ্যা বাড়লে আগের পরিস্থিতি যেন ফিরে না আসে, সেটা দেখতে হবে।’
এক মাস আগেও দাবিদারহীন দেহ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। দু’টি জায়গার মর্গে এই দেহ রাখার জন্য ১৮টি চেম্বার রয়েছে। প্রত্যেকটি চেম্বারে একটি করে দেহ রাখা যায়। কিছু দিন আগেও প্রায় ৫০টি বেওয়ারিশ লাশ ছিল এখানে। এক বছরের বেশি সময় ধরে মর্গে দেহ পড়েছিল। এক মাসে আগে সেগুলি দাহ করা হয়েছে। এখন দাবিদারহীন দেহের সংখ্যা ১২। তাই সমস্যা হচ্ছে না।
ফরেন্সিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান প্রণবেশ ভারতী বলেন, ‘এখন যা ক্যাপাসিটি রয়েছে, তার থেকে কম দেহ থাকলেও কিছু দিন আগে সমস্যা ছিল।’ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ২৪টি ফ্রিজ়ার রয়েছে। কয়েক মাস আগে ফ্রিজ়ার খারাপ হওয়ার কারণে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছিল। এখন পরিস্থিতি ঠিকঠাক। দেহ জমে থাকার সমস্যা নেই। ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ বলেন, ‘ময়নাতদন্তের ডাক্তার না থাকায় মাঝেমধ্যে সমস্যা হয়।’