সধবা মহিলা এতদিন পাচ্ছিলেন বিধবা ভাতা! জানাজানি হতেই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে এল। অভিযোগ, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা টাকার বিনিময়ে ওই মহিলার নাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বদলে বিধবা ভাতার প্রাপকের তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। আর তাই টানা ২ বছর ধরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বদলে বিধবা ভাতার টাকা ঢুকছিল মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যদিও মহিলা দাবি করেছেন যে তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকছে বলেই মনে করেছিলেন, এটা যে বিধবা ভাতার টাকা, সেটা তিনি জানতেন না। শান্তিপুরের বিডিও ওই মহিলা ও তৃণমূল নেতা উত্তম মহালদারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত দু'বছরে পাওয়া বিধবা ভাতার টাকাও ফেরত দিতে বলা হয়েছে মহিলাকে।
শান্তিপুর শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বশুক পল্লির বাসিন্দা শেফালী দে। তিনি বলেন, 'আমি কয়েকবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কোনও ভাবেই টাকা পাচ্ছিলাম না। উত্তম হালদার নামে এলাকার এক তৃণমূল নেতা নিজে এসেই বলেন যে তিনি ব্যবস্থা করে দেবেন। তার জন্য দু'বারে তিন হাজার টাকা দিতে হবে। তাঁর কাছেই কাগজপত্র জমা দিই। কিছু দিন পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা আসতে শুরু করে। এই টাকা যে বিধবা ভাতার টাকা, তা আমি জানতাম না। আমি জানতাম এটা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। আমি তো বিধবা ভাতার জন্য আবেদনই করিনি।' শেফালীর শাশুড়ি বলেন, 'আমার ছেলেকে মৃত করে দিয়েছে। আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চেয়েছিলাম। আমরা সবধা বউমাকে বিধবা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি এখন জানতে পেরেছি, ওই টাকার কি ভাত খেতে পারি। ডেথ সার্টিফিকেট না থেকেও কী করে করল? যে করেছে তার কাছে যাওয়া হোক।'
এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন,'মমতা ব্যানার্জী সন্দেশখালিতে বলেছিলেন "লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপকদের বিধবাভাতা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। যেমন কথা তেমন কাজ !!! মুখ্যমন্ত্রীর বাণী কে ধ্রুব সত্য প্রমাণ করতে চটিচাটা প্রশাসন ও ওনার দলীয় নেতৃত্ব মাঠে নেমে পড়েছেন। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপক সধবা গৃহবধূ কে জোরপূর্বক বিধবাভাতা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিল নদীয়া জেলার শান্তিপুরের পঞ্চায়েত এবং বিডিও। অনুঘটক সেই কাটমানি খেকো স্থানীয় তোলামূল নেতৃত্ব। জীবিত মানুষের নামে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু না হওয়া সত্ত্বেও কি করে তার স্ত্রীর নামে বিধবা ভাতা চালু হয়ে গেলো তার তদন্ত হওয়া উচিত। এরকম আরও কত ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। আমি আগেও বলেছি মুখ্যমন্ত্রী'র এই মন্তব্য অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ। আমি বাংলার মা বোনদের মঙ্গল প্রার্থনা করি এবং আবারো দাবি করি এই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপকদের বিধবাভাতা সংক্রান্ত মন্তব্যের জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নিঃশর্ত ক্ষমা স্বীকার করুন মা বোনদের কাছে।' (অসম্পাদিত)