যাদবপুর, টালিগঞ্জের পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এনিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছেও এনিয়ে অভিযোগ এসেছে। তারপরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ। সেই মতোই এবার যাদবপুর এবং টালিগঞ্জ পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে বসতে চলেছে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন। এই এলাকাগুলিতে মোট ৪টি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে। এর মধ্যে আজ দুটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা এবং বাকি দুটি প্রকল্পের কাজ শুরু হবে আগামী ১০ জানুয়ারি। এই প্রকল্পের সূচনা করার কথা রয়েছে মেয়রের।
পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির ফলে এই সমস্ত এলাকার প্রায় ৪ লক্ষ বাসিন্দা উপকৃত হবেন। এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হবে। জানা গিয়েছে, আজ বুধবার এদিন এই কাজের সূচনার সময় মেয়র ফিরহাদ হাকিম ছাড়াও যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ, বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার এবং টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এদিন যে দুটি স্টেশনের কাজ শুরু হচ্ছে সেগুলি যাদবপুরের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইস্ট সন্তোষপুর রোডের শিবতলা মাঠে এবং অন্যটি ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল মেইন রোডের নজরুল পার্কে। এখানে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন গড়ে তোলা হবে। অন্যদিকে, আগামী ১০ জানুয়ারি টালিগঞ্জের ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেহরু কলোনি চিলড্রেন্স পার্কে এবং ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের জীবনরতন ধর স্মৃতি উদ্যানে একটি করে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হবে। সেই সঙ্গে একটি করে সেমি আন্ডার গ্রাউন্ড রিজার্ভারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
এছাড়াও, গড়িয়া ঢালাই ব্রিজের কাছে ১০ মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতা সম্পন্ন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। তার তোড়জোড় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ধাপায় জয়হিন্দ জল প্রকল্পর ক্ষমতা বাড়িয়ে ৩০ মিলিয়ন গ্যালন করা হবে। এই সব প্রকল্পের জন্য খরচ হবে কয়েকশো কোটি টাকা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুস্টার পাম্পিং তৈরি হলে যাদবপুর, টালিগঞ্জ ও গড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে। ৯৭ থেকে ১০০ এবং ১১১ থেকে ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। পুরসভা সূত্রের খবর, এই কাজ শেষ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে ২০২৬-এর লোকসভা ভোটের আগে।
উল্লেখ্য, গত লোকসভা ভোটের আগে যাদবপুর–টালিগঞ্জ এলাকার পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিধানসভা এলাকা হওয়া সত্ত্বেও যাদবপুরে পানীয় জলের পরিস্থিতি এত খারাপ কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।