শীত পড়তেই ফুলকপি, বাধাকপি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের ছড়াছড়ি—‘বাঙালি মায়েদের ফেভারিট জুটি’, ‘হাতিমার্কা ফুলকপি আর গন্ডার ছাপ বাধাকপি মার্কেটটা চিড়িয়াখানা বানিয়ে দিল’! কোথাও কোথাও আবার বলা হচ্ছে, ১ টাকা, ২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কপি। কিন্তু এই হাসিঠাট্টার বাইরেও একটা ছবি আছে, কৃষকদের দুর্দশার ছবি। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের চাষিদের অভিযোগ, শীতের সবজি হলেও বিক্রি করতে পারছেন না বাজারে। শ্রমের দাম বাদ দিলেও একটা ফুলকপি ফলাতে ৭-৮ টাকা খরচ তাঁদের। কিন্তু ১ টাকা কিংবা ২ টাকা দিয়ে বেচলেও কেউ কিনছেন না বলে অভিযোগ। ফলে মাঠে পড়ে নষ্ট হচ্ছে বিঘার পর বিঘা ফুলকপি।
গোপীবল্লভপুরের সুবর্ণরেখার তীরে পিড়াশিমূল, ভট্টগোপালপুর, টোপগেড়িয়া, বাকড়ায় প্রচুর ফুলকপির চাষ হয়। শীতের আগে তিন চার মাস দিনরাত করে জমি তৈরি করেন। তাতে ফুলকপি, বাধাকপি চাষ করেন। তাঁরা বলছেন, এ বছর একেবারেই কপির বিক্রি নেই।
অবস্থা এমন হয়েছে, যে হাতে এত কষ্ট করে কপি ফলিয়েছেন, সে হাতেই তা নষ্ট করছেন। প্রশাসনের ভূমিকায় বিরক্ত তাঁরা। গোপীবল্লভপুরের চাষি দৈতারি বেরা বলেন, ‘বাজারে সবজির দাম বাড়লে টাস্ক ফোর্স, বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির নামে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নেমে পড়েন। কিন্তু এখন চাষিদের এই শ্রম যে এ ভাবে শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা দেখার কেউ নেই।’
ঝাড়গ্রাম জেলার হর্টিকালচার আধিকারিক সালাউদ্দিন খানের কথায়, ‘এ বছর ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়ে শীতকালীন সবজির ভালো উৎপাদন হয়েছে। শীতের শুরুতেই ফুলকপি, বাধাকপি-সহ অন্যান্য সবজির খুব ভালো চাহিদা ছিল। চাষিরা ভালো দামও পেয়েছেন। মনে হয়, প্রথম দিকে এতটাই মানুষ ফুলকপি, বাধাকপি নিয়ে খেয়েছেন, এখন আর তা কেনায় তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাই হয়ত বাজারের এই অবস্থা।’