জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: স্ত্রী সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন আগেই। 'দুলাল সরকার হত্যাকাণ্ডে বড় মাথা খোদ ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী'! আদালতে পেশের সময়ে বিস্ফোরক ধৃত নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। তাঁর দাবি, আমায় ফাঁসানো হয়েছে। । আমি বড় মাথার শিকার। বড় মাথায় শিকার বাবলাও'।
ঘটনাটি ঠিক কী? মালদহ ইংরেজবাজার পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলা। সঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। বস্তুত, একসময়ে ইংরেজবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। দিনদুপুরে খুন হয়ে গিয়েছে সেই দুলালচন্দ্রই। কবে? নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনেই, ২ জানুয়ারি।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ৭। নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর সন্দেহ, বড় মাথা যুক্ত থাকতে পারে। এরপরই আজ, বুধবার তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলেরই শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে। ধরা পড়েছে স্বপন শর্মা নামে এক ব্যক্তি। পুলিসের দাবি, খুনে সুপারি দেওয়া হয়েছিল পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। নরেন্দ্রনাথ ও স্বপনের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
কৃষ্ণেন্দু নারায়ণের পাল্টা দাবি, 'দলে কেউ যদি থাকে, সে যদি অপরাধ করে, সেখানে তো মাপ করা যাবে না। ও এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিল, দুলাল সরকারকে সরাবার। ভোটের পর সবাইকে বলতে বেড়াত, আমি একদিন বাবলা সরকারকে মারব। নন্দু তিওয়ারি বলত'। তাঁর অভিযোগ, 'নন্দু এলাকা দখল করে পার্টি নাম করে কুকীর্তিগুলি করত। বাবলা ওর সিটে দাঁড়িয়ে জিতেছে, সেটা নিয়ে গন্ডগোল'।
আপনার নাম উঠে আসছে কেন? ইংরেজ বাজার পুরসভার চেয়ারম্যানের জবাব, 'বাঁচবার জন্য অনেক কিছুই বলতে পারে। পুলিস দেখবে, ও বললেই তো হবে না। বাঁচবার জন্য়, আরও কিছু লোককে জড়িয়ে যদি দেওয়া যায়, হালকা হবে'। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, 'আইন আইনের পথে চলছে। একটা খুন হয়েছে, অত্যন্ত আপত্তিকর খুন। যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা উদ্বেগজনক। মুখ্যমন্ত্রী কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছেন পুলিসকে। পুলিস ব্যবস্থা নিচ্ছে, তদন্ত চলছে, গ্রেফতার হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট বিরক্ত, উদ্বিগ্ন। যাঁরা যাঁরা যুক্ত, যে দলেরই হোক, তাঁদের অপরাধ এবং অপরাধী হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুলিস সেই অনুযায়ী ব্য়বস্থা নিচ্ছে'।
বিজেপি রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, আমি আগেই বলেছিলাম যে, 'গত পুরভোটে এই নন্দু তিওয়ারি নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। অনেকে এটাকে রাজনৈতিক খুন বলবেন। কিন্তু রাজনৈতিক খুন বলে মনে করছি না। পুরোটাই হচ্ছে পয়সার জন্য খুন, জমি নিয়ে খুন। মালদাতে বাবলা সরকার স্বর্গত, নন্দু তিওয়ারি, কৃষ্ণেন্দুবাবু একের এক নেতা, যাঁরা শুধু জমির কারবার, কে কোথায় ফ্ল্যাট বিক্রি করবে, কার কোথায় ফ্ল্যাট তৈরি হবে, কে ফ্ল্যাটের পার্সেন্টেজ নেবে। কয়েক কোটি টাকা জমি কয়েক লাখে বিক্রির ব্যবস্থা করবে, এই নিয়ে লড়াই চলছে। যাঁদের নাম বললাম, তাঁরা নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন। শুধু ফ্ল্যাট আর জমির ব্যবসা করে'।