সরকারি জমি পুনর্দখলে বাধা অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য
বর্তমান | ০৯ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে যাওয়া বিএলএলআরও সহ ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে সালানাপুর থানার আছড়া গ্রামে। জানা গিয়েছে, আছড়া মৌজায় কর্মতীর্থের অদূরে বহু খাস জমি রয়েছে। রাস্তার উপর খাস জমি ঘিরে দিয়েছিলেন দোলন মণ্ডল ও তাঁর পরিবার। বার বার নোটিস করার পরও তাঁরা ভ্রূক্ষেপ করেননি। এদিন বিএলএলআরও সুমন সরকার সহ দপ্তরের আধিকারিকরা জমি মাপতে গেলে তাঁদের উপর প্রথমে চড়াও হন পঞ্চায়েত সদস্য তপন তেওয়ারি ও তাঁর ছেলে পল্লব তেওয়ারি। অভিযোগ, তাঁদের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী জমি মাপজোখে বাধা দেয়। এলাকা থেকে না পালালে গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয়। তাতে প্রশাসনিক আধিকারিকরা পিছিয়ে আসেন। পরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সালানপুরের বিএলএলআরও সুমন সরকার বলেন, ‘আমরা জমি মাপজোখ করতে গেলে গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আমরা পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁর ছেলে সহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিস নিশ্চয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ সালানপুরের বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা সরকারি খাস জমি জবরদখল মুক্ত করছি। তাতেই বাধা দেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর ছেলে। পুলিসকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।’ ডিসি সন্দীপ কাররা বলেন, বিএলএলআরও-এর তরফে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’
এদিকে, তৃণমূল অবশ্য অভিযুক্ত ওই পঞ্চায়েত সদস্যের পাশে নেই। সালানপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সরকারি কাজে শাসকদল হস্তক্ষেপ করে না। আইন আইনের পথেই চলবে।’ বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি বাবন মণ্ডল বলেন, ‘তপন তেওয়ারির ভাই আগে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। তাঁর আমলে তাঁর স্ত্রী, শালার নামেও পাট্টা দিয়েছিলেন। এলাকায় নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে সব সরকারি জমি দখলে রেখেছেন ওঁরা।’
ব্লক জুড়েই পুকুর ভরাট, সরকারি জমি দখল করার বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। মঙ্গলবারই রূপনারায়পুর পঞ্চায়েতের ধামিনবেড়িয়ায় খাস জমি দখলদারদের নোটিস করেছে প্রশাসন। তালবেড়িয়া মৌজায় পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। রূপনারায়ণপুর ঢোকার আগেই বনদপ্তরের রেঞ্জ অফিসের উল্টো দিকে জলাজমি ভরাট করার জন্য ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেছে ভূমি রাজস্ব দপ্তর। বিনা অনুমতিতে গাছ কাটার জন্য দপ্তর পৃথক জরিমানা করেছে বলেও জানা গিয়েছে। অভিযোগ প্রসঙ্গে তপন তেওয়ারির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরেন তাঁর ছেলে পল্লব তেওয়ারি। তিনি বলেন, ‘বাবা অসুস্থ কিছু কথা বলার থাকলে এলাকায় আসুন।’ আছড়ায় ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকদের কাজে বাধা।-নিজস্ব চিত্র