চাঁদা তুলে স্টল পড়ুয়াদের, স্কুলের খাদ্যমেলায় ফেভারিট পিঠে-ফুচকা
বর্তমান | ০৯ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, কুমারগ্রাম: দশম শ্রেণির সাতজন বন্ধু ৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়েছে। ফলে পুঁজি বলতে সাড়ে তিনশো টাকা। ওই টাকায় স্কুলের খাদ্যমেলায় ফুচকার স্টল দেয় উদ্ভব শীল, অরিত্র বর্ধনরা। কিন্তু তা যে এতটাই হিট হবে আগে ভাবতে পারেনি তারা। মাঝপথে ফুচকা ফুরিয়ে যাওয়ায় ফের কিনে এনে সামাল দিতে হয়েছে।
শুধু ফুচকা নয়, কেক, পিঠে-পুলি এতটাই বিক্রি হয়েছে যে, এক ঘণ্টার মধ্যে সব শেষ হয়ে যায়। তবে এসবের সঙ্গেই জলপাইগুড়ির মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের খাদ্যমেলায় রীতিমতো টক্কর দিয়েছে স্কুলেরই ছাত্রদের হাতে তৈরি দক্ষিণ ভারতীয় খাবার ‘চিকেন শোয়ারমা’ কিংবা পনির টিক্কা। স্কুলের পড়ুয়াদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবক এমনকী অন্য স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও লোভনীয় সব খাবারের টানে ভিড় জমান সেখানে। চেটেপুটে খান।
ক্রেতা টানতে পিঠেপুলির স্টলের সামনে লেখা ছিল, ‘মনটা অকুল, পিঠে গোকুল। শীতের আমেজ বড়ই মিঠে।’ ১৫ টাকা পিস প্রতি বিক্রি হয় ভাপা পিঠে থেকে পাটিসাপটা। নবম শ্রেণির ছাত্র সোহম শীল, তৃষাণ দত্তরা চিকেন শোয়ারমা বানানোর লাইভ শো করে। সহযোগিতায় ছিলেন স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকা ইপ্সিতা গঙ্গোপাধ্যায়। ছাত্রদের কথায়, রুটির উপর মেহনিজ দিয়ে ভিতরে চিকেনের পুর তৈরি করা হয় ওই শোয়ারমা। ২০ টাকায় বিক্রি হয় পনির টিক্কা। ছাত্ররা স্টল চালালেও সহযোগিতা করেন শিক্ষাকর্মী অনিন্দিতা দত্ত সাহা। নবম শ্রেণির ছাত্রদের হাতে তৈরি কেক, পাটিসাপটার স্টলে ছিলেন শিক্ষিকা মধুমিতা কর্মকার। পিঠের স্টলে ছিল নবম শ্রেণির ছাত্র রাজদীপ কর্মকার। ওই স্টলের দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষিকা মোনালিসা নিয়োগী। বললেন, এতটা সাড়া পাব ভাবিনি। তবে মেলা শেষে বিকিকিনির পর সবচেয়ে বেশি লাভ দেখছে ফুচকার স্টলের ছাত্ররা। স্টলের মূল দায়িত্বে থাকা উদ্ভব শীলের কথায়, লাভের টাকায় বন্ধুরা মিলে পিকনিকের পরিকল্পনা রয়েছে। খাদ্যমেলায় ছাত্রদের উৎসাহ দেখে খুশি শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামী বছর আরও বড় আকারে খাদ্যমেলা করার ইচ্ছে থাকল।
অন্যদিকে, এদিনই কুমারগ্রাম ব্লকের কামাখ্যাগুড়ি ১ নম্বর আর আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাদ্যমেলা হল। মেলায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের হাতে তৈরি পায়েস, পিঠে, ফ্রায়েড রাইস, পোলাও, লুচি, আলুর দম, হালুয়া, পকোড়া, স্যালাড ইত্যাদি খাবার নিয়ে হাজির হয়। টিআইসি সোমা কর্মকার বলেন, সরকারি নির্দেশ রয়েছে, ২ জানুয়ারি থেকে সাতদিন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ছাত্র সপ্তাহ পালন করার। সেই নির্দেশ মেনে গতবছর থেকে আমরা স্কুলে খাদ্যমেলা শুরু করেছি। ৪০ জন ছাত্রছাত্রী খাদ্যমেলায় খাদ্যসম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে। বাড়িতে তৈরি খাবার যে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর এবং কম খরচে সেগুলি তৈরি করা যায়, সেই বিষয়টি খাদ্যমেলায় ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা হল। নিজস্ব চিত্র।