• দুলাল খুনে ধৃত তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত তৃণমূলের, জল্পনা
    এই সময় | ০৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন দলেরই শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মা। নরেন্দ্রনাথ ওরফে নন্দুর এই ঘটনায় নাম জড়ানো এবং মূল অভিযুক্ত হিসেব গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় অস্বস্তিতে দলও। এই আবহে নরেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পথে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, নরেন্দ্রনাথকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি বৃহস্পতিবার দুপুরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেন। এ বিষয়ে যে সাংবাদিক সম্মেলন হবে, এই সময় অনলাইনকে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

    গত ২ জানুয়ারি সকালে মালদার ইংরেজবাজার শহরে নিজের কারখানার কাছে খুন হন তৃণমূল কাউন্সিলার দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলা। সেই ঘটনায় ৮ তারিখ গ্রেপ্তার হন নরেন্দ্রনাথ ওরফে নন্দু। এক সময় এই নন্দু ও বাবলা ছিলেন হরিহর আত্মা। কংগ্রেসে রাজনীতির হাতেখড়ি, পরে একই সঙ্গে দুই বন্ধু যোগ দেন তৃণমূলে। আর সেই বাল্যবন্ধুই বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ।

    এক সময়ে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন নরেন্দ্রনাথ। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২২ সালে নরেন্দ্রনাথ টিকিট পাননি। বদলে বাবলা টিকিট পান এবং জয়ীও হন। অভিযোগ, নরেন্দ্রনাথ ক্রমেই কোণঠাসা হতে শুরু করেন জেলার সক্রিয় রাজনীতিতে। কাউন্সিলার থেকে মামুলি শহর সভাপতি পদ! অভিযোগ, ২০২২ সালের পুরভোটের পর থেকে এই ‘গাঢ় বন্ধুত্ব’-এর রং ধীরে ধীরে আবছা হতে শুরু করে। মাঝে এসে পড়ে ক্ষমতা দখলের বাসনা।

    বাবলার খুনের ঘটনার পর ‘এই সময়’-কে নরেন্দ্রনাথ বলেন, ‘বাবলাকে এলাকায় ঢুকে দুষ্কৃতীরা মেরে দেবে, এটা ভাবাই যায় না। একটা গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করেছে। পুলিশ সত্যিটা মানুষের সামনে তুলে ধরুক।’ বুধবার এই ঘটনার ‘সত্যিটা’ সামনে আনল পুলিশ। রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার দাবি করেছেন, ৫০ লক্ষ টাকা সুপারি দিয়ে খুন করা হয়েছিল বাবলাকে। 

    যদিও গ্রেপ্তারের পর নরেন্দ্রনাথ দাবি করেছিলেন, তাঁকে ‘বড় মাথা ফাঁসিয়েছে’। কে বড় মাথা? এ নিয়ে ইংরেজবাজার পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর মতামত জানতে চাওয়া হলে, তিনি আরও সাংঘাতিক দাবি করে বসেন। জানান, নরেন্দ্রনাথ দুলালকে একাধিকবার মারার হুমকি দিয়েছিলেন। কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ পাল্টা নরেন্দ্রনাথকেই ‘বড় মাথা’, ‘প্রভাবশালী’ বলেও দাগিয়ে দেন।

    মালদায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের অভিযোগ নতুন নয়। বছর ভরই আকচাআকচির অভিযোগ আসে এই জেলা থেকে। শীর্ষনেতৃত্ব এ নিয়ে কড়া বার্তাও দিয়েছেন বহুবার। সেই আবহে দুলাল সরকারের খুনের ঘটনা। নরেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে দল সত্যিই কি কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে, আজই তা স্পষ্ট হবে বলে দলের কর্মীদের একাংশের দাবি।

  • Link to this news (এই সময়)